৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত বিএনপির

December 21 2019, 14:54

আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি। বর্তমান ক্ষমতাসীনরা সেদিন বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যা করেছে বলে অভিযোগ বিএনপি। এজন্য ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

এরআগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়ায় এবং তাকে জামিন না দেয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এবং অবিলম্বে মুক্তির দাবি করা হয়। কারণ তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য একটি কার্যকরী আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। একইসাথে বাংলাদেশের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদ এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবীর মুরাদের মৃত্যুতে বৈঠকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়। উভয়ের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আগামী ১৯ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহদী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী। তার জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য বর্ণাঢ্য কর্মসূচী পালন করা হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট নেতাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্ধশত বার্ষিকী। সেজন্য বিএনপির পক্ষে বছরব্যাপী কর্মসূচী থাকবে। এ লক্ষ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে আহ্বায়ক করে একটি উপকমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম ও সেলিমা রহমান। তারা প্রয়োজন হলে কমিটির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারবেন। এরপর তারা স্বাধীনতার অর্ধশত বার্ষিকী পালনের কর্মপরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত জানাবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রতিবাদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গাম্বিয়া মামলা করায় দেশটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেবে বিএনপি। সেইসাথে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস রোহিঙ্গা ইস্যুতে মামলা পরিচালনায় গাম্বিয়াকে সহযোগিতা করায় এই দেশ দুটিকেও লিখিত ধন্যবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত হয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। কেননা সেখানে বাংলাদেশের কোনো ভূমিকা ছিল না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রাজনৈতিক জীবনে অত্যন্ত কলঙ্কিত। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের বর্ষপূতি হবে। আসলে সেদিন নির্বাচনের নামে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। সেজন্য দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করবে বিএনপি। দিনটি যথাযোগ্যভাবে গুরত্বসহকারে পালনের জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, বিশ দলীয় জোট এবং বিএনপি কর্মসূচী গ্রহণ করবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক পুরনো দল। কিন্তু তাদের হাতেই বার বার গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। আবারো গত এক দশক ধরে একদলীয় বাকশাল শাসন কায়েমর পথ প্রশস্ত করছে। তারপরও রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃবৃন্দকে বিএনপি স্বাহত জানায়। আমরা আশা করবো তারা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে নতুন নির্বাচন দিতে উদ্যোগ নেবে।

বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্ব চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু ও সেলিমা রহমান।