২ শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার পর হত্যা : দু’জনের মৃত্যুদণ্ড

March 03 2020, 08:28

রাজধানীর ডেমরায় ফারিয়া আক্তার দোলা (৭) ও নুসরাত জাহানকে (৫) ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যার অভিযোগে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় আসামিরা উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- গোলাম মোস্তফা ও আজিজুল বাওয়ানী। গোলাম মোস্তফা পেশায় একজন সিরামিক মিস্ত্রি। আজিজুল বাওয়ানী তার ফুপাতো ভাই।

মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি রায়ে আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জারিমানা করা হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহমুদা বেগম।

মামলা সূত্রে জানা যায়, হত্যার শিকার দুই শিশু ফারিয়া আক্তার দোলা (৭) ও নুসরাত জাহান (৫) ডেমরার কোনাপাড়ায় একটি নার্সারি স্কুলে পড়ত। কোনাপাড়ায় শাহজালাল রোডে পাশাপাশি দুটি বাসায় থাকত তারা।

২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি ‘লিপস্টিক দিয়ে সাজিয়ে দেয়ার’ প্রলোভনে দুই শিশুকে বাসায় ডেকে নেয় মোস্তফা ও আজিজুল। ঘরে নিয়ে প্রথমে শিশু দু’টিকে নিজের স্ত্রীর লিপস্টিক দিয়ে সাজায় মোস্তফা। এরপর মামাতো-ফুফাতো এই দুইভাই মিলে ইয়াবা সেবন করে। তারপর উচ্চস্বরে গান চালিয়ে দুই শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে তারা। কিন্তু শিশু দু’টির চিৎকারে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ফারিয়াকে গলাটিপে হত্যা করে আজিজুল। নুসরাতকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে মোস্তফা।

ময়নাতদন্তে জানা যায়, দোলাকে ধর্ষণ ও নুসরাতকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয়। পরে তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

৯ জানুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মোস্তফা ও আজিজুল। তাতে বলা হয়, তারা দুজন ইয়াবার নেশা করে জোরে গান বাজিয়ে মেয়ে দুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। দোলাকে ধর্ষণের পর নুসরাতকেও ধর্ষণের চেষ্টা করে তারা ব্যর্থ হয়। তখন গলায় গামছা পেঁচিয়ে মেয়ে দুটিকে হত্যা করে খাটের নিচে লাশ রেখে তারা বেরিয়ে যায়।

হত্যাকাণ্ডের ১৬ দিনের মাথায় মোস্তফা ও আজিজুলকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। সেখানে দণ্ডবিধির ৩০২/২০১/৩৪ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১)/৯(৪)(খ) ধারায় একজনকে ধর্ষণ, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা, দুজনকে হত্যা ও আলামত নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৩০ জনকে সাক্ষী করা হয় এ মামলায়।