স্বামী-শাশুড়িকে পিটিয়েছে বউ, থানায় নির্যাতন মামলা

February 08 2020, 17:31

জয়পুরহাটে স্ত্রীর নির্যাতন ও হয়রানিতে অতিষ্ট হয়ে স্বামী সুমন ও তার পরিবার থানায় অভিযোগ করেছেন। সদর উপজেলার মোহাম্মাদাবাদ ইউনিয়নের নিশিরমোড় পশ্চিম পারুলিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।

জানা গেছে, সদর উপজেলার নিশির মোড় পশ্চিম পারুলিয়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে সুমনের সাথে বিয়ে হয় একই এলাকার ইয়াদুলের মেয়ে ইয়াসমীন আকতার রিপার। বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই ছিল।

রিপার বাবার বাড়ি একই এলাকায় ও প্রভাবশালী হওয়ায় গত এক বছর আগে রিপা তার স্বামীর পরিবারের জমি-জমা, বসতভিটা তার নিজের নামে লিখে দেয়ার জন্য স্বামী ও শাশুড়িকে চাপ দিতে থাকে। তারা জমি লিখে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে রিপা ২ লাখ টাকা মোহরানা ফেরত চেয়ে আদালতে একটি নির্যাতনের মামলা করেন। এরপর আদালতের মাধ্যমে মামলাটি আপোষ হয়।

এরপরও স্বামীর সাথে বনিবনা হয় না রিপার। আবারও নিজের নামে জমি লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে। এর জের ধরে রিপা শনিবার সকালে ভাড়া করা সন্ত্রাসী নিয়ে স্বামীর বাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় বাড়িতে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকাসহ স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। স্বামী সুমন ও শাশুড়ি শিরিনাকে মারধর করে ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা।

এ সময় গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। রিপা ভেঙে যাওয়া কাঁচের টুকরো দিয়ে নিজেই নিজের হাত কেটে ফেলে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। বর্তমানে রিপা তার বাবার বাড়িতে রয়েছে।

ভুক্তভোগী স্বামী সুমন জানান, আমার স্ত্রী রিপা আমার বাড়ি বসতভিটাসহ সব জমি তার নামে লিখে নেওয়ার জন্য এবং আমার মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার জন্য আমাকে চাপ দিয়ে আসছিল। আমি এসব না করায় আমাকে বিভিন্ন নির্যাতন ও হয়রানি করে আসছিল। এরই প্রেক্ষিতে আজ সে সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে এবং আমার বাড়ি ভাংচুর করেছে। আমাদের ফাঁসানোর জন্য সে নিজেই কাঁচ দিয়ে নিজেই নিজের হাত কেটেছে । এ জন্য বাধ্য হয়ে আমি জয়পুরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, মেয়েরা নির্যাতিত হলেই তারা থানায় মামলা করে। কিন্তু বর্তমানে অনেকে প্রতিনিয়তই বউয়ের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আসছে। লোকলজ্জার ভয়ে কেউ এসব বিষয় কাউকে বলে না। সব কিছু সহ্য করে নেয়। সমাজের নির্যাতিত পুরুষদের এক হয়ে প্রতিবাদ করা দরকার।

এদিকে অভিযুক্ত ইয়াসমীন আকতার রিপা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব কিছু আমার স্বামী, শাশুড়ি ও তাদের লোকজন ভাংচুর করেছে। এমনকি তারা আমাকে মারধর করেছে।

জয়পুরহাট সদর থানার এসআই সাব্বির আরাফাত জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এ ঘটনার তদন্ত চলছে, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।