রিফাত হত্যায় ৭৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ

February 09 2020, 14:01

বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় পৃথক আদালতে আরো ৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার জেলা ও দায়রা জজ মো: আছাদুজ্জামান এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনালের বিচার মো: হাফিজুর রহমানের আদালতে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা রেকর্ড করা হয়। পরে আসামী পক্ষের আইনজীবিরা তাদের জেরা করেন।

বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদলাতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ভুবন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, বিজ্ঞ আদালতে আজ ৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা রেকর্ড করা হয়েছে। ওই দিন জেলা ও দায়রা জজ মো: আছাদুজ্জামানের আদালতে সন্ধ্যা রাণী মন্ডল, মো: নান্না মিয়া, মো: শানু হাওলাদার ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনালের মো: হাফিজুর রহমানের আদালতে মো: হেলাল শিকদার, সৈয়দ মাইনুল হক ও দুলাল খানের জবানবন্দি ও জেরা রেকর্ড করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আলোচিত এ হত্যা মামলায় ৭৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। এদের মধ্যে জেলা ও দায়রা আদালতে ৫৩ জন ও শিশু আদালতে ২৫ জনের সাক্ষ্য জেরা সমাপ্ত হয়।

এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে রিফাত হত্যা মামলার আসামীদের আদালতে আনা হয়। জেলা ও দায়রা আদালতে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ৯ জন আসামী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৪ জন শিশু আসামী উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষ্য দেয়ার পরে কোর্ট প্রাঙ্গণে সাক্ষ্য সৈয়দ মাইনুল হক বলেন, মাইনুল ট্রেডার্স নামে কলেজ রোডে আমার একটি ষ্টেশনারী দোকান আছে। ঘটনার দিন ২৬ জুন আমি দোকানে ছিলাম। লোকজনের চিৎকার শুনে রাস্তার দিক তাকাই। ওই সময় রিফাত ফরাজিকে আমার দোকানের দক্ষিণ পাশে পরিত্যক্ত টিনের চালের উপর হতে দুইটি দা নিয়ে দৌড়ে যেতে দেখি। পরে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজি ওই দা দিয়ে রিফাত শরীফকে কোপায়। ওই সময় রিশান ফরাজিসহ আরও ১৫/১৬ জন লোক দাঁড়িয়ে ছিল। আমি তাদের না চিনলেও পরে ভিডিও দেখে রায়হান, অলি, চন্দন, নাঈম, তানভির নেয়ামতসহ অনেকের নাম জেনেছি। তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাহারা দিতেছিল।

হেলাল শিকদার আরেকজন সাক্ষ্য দিয়ে বলেন, আমি ঘটনার সময় ছিলাম না। তবে ঘটনার পরে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে আসামীদের নাম জেনেছি। ভিডিওতে দেখেছি রিফাত শরীফকে বেশ কয়েকজন যুবক কলেজগেট হতে মারতে মারতে ক্যালিক্স একাডেমিতে নিয়ে আসে।

অন্য আসামীরা বলেন, আমরা যতটুকু দেখেছি এবং পরবর্তিতে শুনেছি আদালতে তাই বলেছি। আমরা কোন অসত্য সাক্ষ্য দেইনি।

আসামী পক্ষের আইনজীবী মো: মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, স্বাক্ষিরা যে সাক্ষ্য দিয়েছেন সেখানে তারা কোন শিশু আসামীকে কোপাতে বা মারধর করতে দেখেননি বলে জানান।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করে কয়েকজন যুবক। পরে ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক; এ দু ভাগে বিভক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন।