সারাদেশে তীব্র শীতের দাপট থাকবে আরো কয়েকদিন

December 21 2019, 07:45

বাংলাদেশে গত কয়েকদিন ধরে চলা শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেছে, তবে ঠাণ্ডার দাপট এখনো রয়েছে। প্রচণ্ড শীতে অনেকটা কাবু হয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকার জনজীবন।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর ঠাণ্ডা বাতাসে হিমশিম খেতে হচ্ছে দেশটির বাসিন্দাদের।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শীতের এই ভাব আরো কয়েকদিন থাকবে।

চুয়াডাঙ্গার বাসিন্দা উম্মে রোমানা বলছেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড শীত। শীতের সঙ্গে বাতাস, বাসার বাইরেই বের হতে পারছি না। কুয়াশায় চারদিক অনেকটা অন্ধকার হয়ে রয়েছে। বাসার বয়স্করা আর শিশুরা অসুস্থ পড়ছে।’

তিনি বলছেন, ‘গতকালের চেয়ে আজ ঠাণ্ডা আরো বেশি পড়েছে। বাধ্য না হলে বাসার কেউ বাইরে বের হচ্ছে না।’

অন্যান্য এলাকার তুলনায় রাজধানী ঢাকায় শীত তুলনামূলক কম পড়লেও এই শৈত্যপ্রবাহে কাবু হয়ে পড়েছে নগরবাসীও।

ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা কানিজ ফাতেমা বলছেন, ‘বৃহস্পতিবার বাধ্য হয়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে সিএনজিতে করে অফিসে গিয়েছিলাম। এখন ঠাণ্ডা লেগে গেছে, জ্বর জ্বর ভাব। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে গতকাল আর আজ বের হইনি। আলমারি থেকে লেপতোশক বের করে ব্যবহার করতে শুরু করেছি।’

ঢাকার অনেক স্থানে পথের পাশে মানুষজনকে কাগজ-কাঠ জড়ো করে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।

কী বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, দেশের ওপর দিয়ে একটি যে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছিল, সেটা শেষ হয়ে গেছে। তবে দিনে তাপমাত্রা কম থাকায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। সেটা আরো কয়েকদিন থাকতে পারে।

তিনি বলছেন, উত্তর-পশ্চিম শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ (জেড বায়ু) বেশি সক্রিয় থাকায়, মেঘলা আকাশ এবং ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো আসতে পারছে না। বাতাসে জলীয় বাষ্পে আর্দ্রতাও বেশি। ফলে দিনে তাপমাত্রা না বাড়ায় ঠাণ্ডা জেঁকে রয়েছে।

গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ফরিদপুরে ১০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারের টেকনাফে ২৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মানুষজনের চরম ভোগান্তি

শীতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে বয়স্ক মানুষ এবং শিশুরা। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ নিয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে হাসপাতাল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ঘন কুয়াশার কারণে শুক্রবার রাতে পদ্মার পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি চলাচল পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়।

শনিবার সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও কুয়াশার কারণে চার ঘণ্টা বিমান চলাচল বন্ধ রাখতে হয়।

এ মাসের শেষে আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ

আবহাওয়া দপ্তর বলছে, এ মাসের শেষের দিকে আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলছেন, কালকের পর আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হবে। ঠাণ্ডা ভাবটা কিছুটা কমে যাবে। তবে এই মাসের শেষের দিকে আরেকটি মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে।

তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে হলে সেটি শৈত্যপ্রবাহ বলে ধরা হয়। ফলে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ওপরে হওয়ায় শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেছে বলে আবহাওয়াবিদরা বলছেন।

আগামী কয়েকদিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, চলতি মাসের শেষদিক ছাড়াও জানুয়ারির প্রথমদিকে আরেকটি মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

দেশের উত্তরাঞ্চলে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্র : বিবিসি