ভোলার ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীতে রাস্তা অবরোধ
ভোলার বোরহানউদ্দিনে ধর্ম অবমাননার প্রতিবাদ সমাবেশে জনতার ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনার বিচার দাবিতে ঢাকার মোহাম্মদপুরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও রাস্তা অবরোধ করেছে সাধারণ মুসল্লিরা।
আজ সোমবার সকাল ১০টার পর থেকে তারা মোহাম্মদপুর টাউন হল আল্লাহ করিম মসজিদের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন। অবরোধ কর্মসূচিতে হাজার হাজার মুসল্লি অংশ নেন। এসময় আশপাশের রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
মোহাম্মদপুর থানার ডিউটি অফিসার এএসআই বাদল জানান, দুপুর ১২টার পরে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধকারীরা বোরহানউদ্দিনের ঘটনায় পুলিশকে অভিযুক্ত করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এবং আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের নামে উৎসর্গ করা চার ব্যক্তির রক্ত বৃথা যাবে না বলে স্লোগান দেয়। একই সময় তারা ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ- ইসকনের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধেরও দাবি জানান।
গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জারে বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামে একজন আল্লাহ ও রাসূল সা: সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মেসেজ পাঠায় এবং স্ট্যাটাস দেয়।
এর প্রতিবাদে গতকাল রোববার বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ মাঠে সর্বস্তরের তৌহিদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। অন্য দিকে বিক্ষোভ মিছিলটি না করার জন্য বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ মসজিদের ইমাম মাওলানা জালাল উদ্দিন, বাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা মিজানকে পুলিশ অনুরোধ জানায়। পুলিশের অনুরোধে এ দুই ইমাম সকাল ১০টায় যেসব লোক আসছেন তাদের নিয়ে দোয়া মুনাজাতের মাধ্যমে বিক্ষোভ মিছিলটি সমাপ্ত করেন। কিন্তু ততক্ষণে বোরহানউদ্দিনের বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার লোক এসে ঈদগাহে জড়ো হন।
জড়ো হওয়া লোকজন একপর্যায়ে ওই দুই ইমামের ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং সেখানে থাকা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে মসজিদের ইমামের রুমে আশ্রয় নেয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। তারা নিজেদের বাঁচানোর জন্য উত্তেজিত মুসল্লিদের ওপর ফাকা গুলি ছুড়ে। এতে সেখানে থাকা মুসল্লিরা আরো উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়। সকাল ১০টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত দফায় দফায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ হয়। এতে চার মুসল্লি নিহত হয়েছেন এবং ১০ পুলিশ সদস্যসহ দেড় শতাধিক মুসল্লি আহত হন।
নিহতদের মধ্যে একজন মাদরাসাছাত্র ও একজন কলেজের ছাত্র রয়েছে।
এ ঘটনায় বোরহানউদ্দিন থানার এসআই আবির বাদি হয়ে ৫ হাজার সাধারণ মুসল্লির নামে মামলা করেন।