ব্রিটেনে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের যারা নির্বাচিত হলেন
ব্রিটেনের রাজনৈতিক ইতিহাসে এবারই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে বৈচিত্রময় পার্লামেন্টে। এবার ৬৫জন অভিবাসী বংশোদ্ভূত নেতা এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বশেষ পার্লামেন্টে জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্য থেকে এমপির সংখ্যা ছিলো ৫২ জন।
নির্বাচিত ৬৫ জনের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতদের সংখ্যা ১৫ জন করে। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত চার জন। বাকিরা এশিয়ার অন্যান দেশের।
বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নির্বাচিত এমপিদের সবাই নারী। তারা হলেন রুশনারা আলী, রুপা হক, টিউলিপ সিদ্দিকী, আপসানা বেগম। এদের মধ্যে আপসানা বেগম এবার প্রথম নির্বাচিত হয়েছেন। অন্য তিনজন প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিদায়ী পার্লামেন্টেও। এ চারজনই নির্বাচিত হয়েছেন বিরোধী দল লেবার পার্টি থেকে।
জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে আগের পার্লামেন্টে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এমপির সংখ্যা ছিলো ১২ জন। এবার তা বেড়েছে, আগের ১২ জনের মধ্যে একজন হেরেছেন, আর নতুন ৪জন এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বেশির ভাগই বিরোধী দল লেবার পার্টির। লেবার পার্টির টিকেটে জিতেছেন, জারাহ সুলতানা, তাহির আলী, খালিদ মাহমুদ, শাবানা মাহমুদ, নাজ শাহ, ইমরান হুসাইন, মুহাম্মাদ ইয়াসিন, ইয়াসমিন কুরেশি, ড. রোসেন্নাহ আলী খান ও আফজাল খান।
আর বিজয়ী বরিস জনসনের কনজারভেটিভ পার্টি থেকে জিতেছেন সাবিক ভাট্টি, সাজিদ জাভিদ, নুসরাত গনি, রহমান চিশতি, ও ইমরান আহমেদ। এদের মধ্যে সাজিদ জাভেদ সদ্য সমাপ্ত পার্লামেন্টের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপিদের সংখ্যাও পাকিস্তানের সমানুপাতিক। তারাও আগের ১২ জন থেকে বেড়ে ১৫ জন হয়েছেন। ভারতীয়দের মধ্যে লেবার ও কনজারভেটিভ পার্টির হয়ে জেতা এমপির সংখ্যা সমান ৭ জন করে। অন্য একজন জিতেছেন তৃতীয় আরেকটি দলের হয়ে।
ক্ষমতাসীনদের টিকেটে বিজয়ী ভারতীয় বংশোদ্ভূতের মধ্যে রয়েছে গেগান মাহিন্দ্র, ক্লায়ার কৌতিনহো, প্রীতি প্যাটেল, অলোক শর্মা, শৈলেশ ভারা, সুয়েলা ব্রাভেরমন ও ঋষি সুনাক। আর লেবার পার্টির হয়ে জিতেছেন নাভেন্দু মিশ্র, বীরেন্দ্র শর্মা, তানমানজিত সিং দেশি, সীমা মালহোত্রা, প্রীত কাউর গিল, লিসা নন্দী ও ভ্যালেরি ভাজ। এছাড়া লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হয়ে জিতেছেন মুনিরা উইলসন।
লেবার পার্টির টিকেটে নির্বাচিত হয়েছে তুর্কি-কুর্দি বংশোদ্ভূত ফেরিয়াল ক্লার্ক। বিজয়ী দল কনজারভেটিভ পার্টি থেকে জিতেছেন ইরাকি বংশোদ্ভূত নাদিম জাহাবি। জাহাবি এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় বার জিতলেন।
এবারের নির্বাচনে মূল ইস্যু ছিলো ব্রেক্সিট। কনজারভেটিরা সরাসরি ব্রেক্সিটের পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার করে ভোট চেয়েছে। তাদের একটাই এজেন্ডা ছিলো- নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করা।
অন্য দিকে ব্রেক্সিট নিয়ে সরাসরি কোন এজেন্ডা দিতে পারেনি লেবার পার্টি। তাদের ইশতেহার ছিলো অস্পষ্ট। তারা ব্রেক্সিট চায় কি চায় না সেটি স্পষ্ট করে বলেনি। বলেছে, ক্ষমতায় গেলে আবার ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোট আয়োজন করবে। যেহেতু ব্রিটিশরা মনে প্রাণে চায় ব্রেক্সিট কার্যকর হোক, তাই তারা কনজারভেটিভ পার্টিকেই বেছে নিয়েছে।