ফখরুল আমার সাথে কথা বলেছেন রেকর্ড আছে : কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজকে দেখলাম ফখরুল সাহেব বলেছেন আমাকে তিনি ফোন করেনি। আমি তাকে ছোট করতে চাই না। তিনি আমার সাথে কথা বলেছেন সেটা রেকর্ড আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি (মির্জা ফখরুল) আমাকে অনুরোধ করেছেন বেগম জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটু কথা বলার জন্য। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়েছি। এখন অসত্য কথা কেন বলব। তিনি আমাকে অনুরোধ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা বিভাগের সকল জেলা, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত জাতীয় সংসদ সদস্যগণের এক যৌথ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপতৎপরতায় লিপ্ত। তারা আন্দোলনের ব্যর্থ হয়ে, নিবাচনে ব্যর্থ হয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তারা আজকে কথায় কথায় বিদেশিদের কাছে ধরণা দিচ্ছে। তারা নতুন নতুন ইস্যু খোঁজার চেষ্টা করছে।
আন্দোলনে ও জনবিস্ফোরণে ব্যর্থ দলটি কোনো নতুন সুযোগ পাওয়া যায় কি না, বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তারা নতুন নতুন নাটক করছে। রাজনৈতিক ফায়দার জন্য তারা বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে নাটক করছে।
কাদের বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। তিনি দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত। এটা সরকারিভাবে মুক্তির বিষয় নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার সেই মামলা করেছে। মামলাটি আদালতে গড়াতে গড়াতে আজকের অবস্থায়।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব একজন ঝানু রাজনীতিবিদ কিন্তু ঝানু চিকিৎসক নন। বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে তিনি কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। তার বয়স বিচারে চিকিৎসকরা বলছেন তার অবস্থা ভালো। যে অবস্থানে থাকার কথা সেই অবস্থানে আছে। কোন প্রকার অবনতি হচ্ছে না। তার শারীরিক অবস্থা যেখানে আছে সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসা দিচ্ছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বেগম জিয়াকে মানবিক কারণে মুক্তি দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা কোনো আবেদন করেনি।
প্রতিনিধি সম্মেলনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের এই প্রতিনিধি সম্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে দলকে সুশৃংখল করা। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের কর্মসূচির সাথে সঙ্গতি রেখে আমাদের পার্টিকেও ঢেলে সাজাতে হবে। ভেতরের অন্ত কোন্দল, কলহ যেকোনো মূল্যে অবসান করতে হবে। দলের মধ্যে বিভেদ রেখে দলকে শক্তিশালী করা যায় না।
তিনি বলেন, কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা আমাদের আছে এটা সত্য। অনেক ক্ষেত্রে নেতৃত্বের জন্য সমস্যাটা সৃষ্টি হয়। কে কতটা প্রভাবশালী কে কতটা শক্তিশালী সেটি আগে ভাবা হয়। অথচ আগে আমাদের যেটা ভাবতে হবে দলকে কতটা প্রভাবশালী, দলকে কতটা শক্তিশালী করা যায়।
দলের অবস্থানের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, নিবাচনের ক্যাম্পেইন করতে গেলে বোঝা যায় দলের অবস্থাটা কি? ঢাকা সিটি নির্বাচনে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সততা ও ক্লিন ইমেজের কারণেই আমরা পার পেয়ে গেছি।
কথাটা অপ্রিয় হলেও অস্বীকার করা যাবে না। সংগঠনের দুর্বল অবস্থাটা নির্বাচন আসলে বোঝা যায়। উপরে হাজার হাজার লোক শ্লোগান দিচ্ছে কিন্তু দলের ভেতরের ছবিটা দুর্বল হয়ে পড়েছে এই দুর্বলতা যেকোনো মূল্যে কাটিয়ে উঠতে হবে আমাদের।
কাদের বলেন, সামনে মুজিববর্ষ। আমি পরিস্কারভাবে একটা কথা বলছি। কিছুক্ষণ আগে আমি আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বলেছি।
তিনি একটা কথা পরিস্কারভাবে বলে দিয়েছেন, মুজিববর্ষ উদযাপন করবেন একটা নিয়মের মধ্যে। তার নামে কোন প্রকার চাঁদাবাজি করা যাবে না। মুজিববর্ষের নামে চাঁদাবাজির দোকান যেন না হয়। তাতে বঙ্গবন্ধুকে তুচ্ছ করা হবে। বঙ্গবন্ধুর উচ্চতা বাড়াতে এসব চাঁদাবাজির দোকানগুলো বন্ধ করতে হবে।
একই সময় কমিটি করার সময় সংগঠনের স্বার্থে দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহা উদ্দীন নাসিম, বিএম মোজাম্মেল হক, মিজা আজম, কল্পনা, অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।