প্রভাবশালী পরিবারে প্রেম, অতঃপর প্রেমিককে পিটিয়ে হত্যা
নীলফামারীর সৈয়দপুরে অনার্স পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৭ মার্চ সকালে উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের হুগলীপাড়ায় বাদলের লিচু বাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত যুবকের নাম বিধান চন্দ্র (২৫)। সে বোতলাগাড়ীর বালাপাড়া শান্তিপাড়ার প্রফুল্ল চন্দ্র ঘটুর ছেলে এবং সৈয়দপুর সরকারী কলেজের রাস্ট্রবিজ্ঞান (অনার্স) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। লাশ গলায় দড়ি লাগানো অবস্থায় গাছে ঝুলানো ছিল এবং পা দু’টি দড়ি দিয়ে বাধা ছিল। তাছাড়া সুরতহাল রিপোর্টের সময় শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর মুখে মুখে এটি হত্যাকান্ড এবং প্রভাবশালী পরিবারের অপকর্ম বলে জল্পনা কল্পনা চলছে।
প্রেমের ঘটনায় প্রেমিকার পরিবারের লোকজন তাকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ বিধানের অভিভাবকদের।
তারা জানায়, একই এলাকার হুগলীপাড়ার উত্তম কুমারের মেয়ে পলি (২২) এর সাথে বিধানের প্রেমের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। কিন্তু মেয়ের পরিবার তাদের প্রেমকে মেনে নেয়নি। তারপরও বিধানের প্রতি পলির প্রেমের কমতি ছিলনা। ফলে তাদের মেলামেশা প্রতিরোধ করা যাচ্ছিলনা। এমতাবস্থায় পলির বাবা প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার সাবেক মহিলা মেম্বারের স্বামী রফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় প্রায় ৬ মাস আগে বিধানকে আটকে বেধড়ক মারপিট করে এবং স্থানীয়ভাবে শালিস বসিয়ে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে। সেই সাথে পলিকে জোড় পূর্বক নীলফামারী সদরের চড়াইখোলা গ্রামে বিয়ে দেয়।
কিন্তু বিয়ের পরও পলি বিধানের সাথে মোবাইলে কথা বলাসহ লুকিয়ে দেখাও করে। এটা জানতে পেরে বৃহস্পতিবার রাতে বিধানকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং ঘটনা ধামাচাপা দিতে লাশ লিচু বাগানের গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এমনকি লাশের পা দড়ি দিয়ে বাধাও ছিল।
বিধানের মামা অনিমেষ চন্দ্র বলেন, এটা যদি আত্মহত্যা হয় তাহলে লাশের পা দড়ি দিয়ে বাধা ছিল কেন। আত্মহত্যা নয়, বরং পলির বাবা উত্তম কুমার ও তার সহযোগিরা বিধানকে হত্যা করেছে। যার চিহ্ন বিধানের শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যমান। বিশেষ করে পুরুষাঙ্গে আগাতের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা এর দৃস্টান্তমূলক বিচার চাই।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত খান বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য নীলফামারী মর্গে প্রেরণ করা হবে এবং তদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।