প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংখ্যালঘুদের সবচেয়ে আপনজন : ওবায়দুল কাদের

December 11 2019, 12:39

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময়ে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে সুখে ও শান্তিতে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংখ্যালঘুদের সবচেয়ে আপনজন।

তিনি বলেন, ‘৭৫ পরবর্তী সংখ্যালঘু বান্ধব সরকার হল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। এই সরকারের আমলে সংখ্যালঘুরা সুখে ও শান্তিতে আছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতেই পারে। সবচেয়ে বড় কথা হল শেখ হাসিনা সংখ্যালঘুদের সবচেয়ে আপনজন’।

ওবায়দুল কাদের আজ বুধবার হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নিমতলায় জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

‘বিএনপি সংখ্যালঘু বান্ধব সরকার ছিল’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই বক্তব্য শুনে আমি হাসব কি, কাঁদব ভেবে পাইনা। বিএনপি নাকি মাইনরিটি বান্ধব সরকার ছিল। এটি বললে কি কেউ বিশ্বাস করবে? ২০০১ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন যেভাবে মাইনরিটি নির্যাতন, ধর্ষণ ও লুন্ঠন করেছে তা শুধুমাত্র ৭১ এর বর্বরতার সাথে তুলনীয়। সেই সময় নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতায় বিএনপি নতুন রেকর্ড স্থাপন করে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মো. আবু জাহির এমপির সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এমপির পরিচালনায় সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও এডভোকেট মিসবা উদ্দিন সিরাজ, বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলী এমপি, শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী এমপি, শেখ নেছার আহমেদ এমপি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এর আগে ওবায়দুল কাদের জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নেতাদেরকে কর্মী বান্ধব হতে হবে। ঘরের ভিতর ঘর করা যাবে না। পকেট কমিটি গঠন করা যাবে না। আওয়ামী লীগে খারাপ লোক দরকার নাই।

তিনি বলেন, ‘দলে কোন টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, জমিদখলকারী, সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী, দুর্নীতিবাজ, সসন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীর দরকার নেই। দল ভারী করতে খারাপ লোককে দলে আনা যাবে না। মনে রাখতে হবে শেখ হাসিনা আপনাদেরকে নেতা ও এমপি বানিয়েছেন নিজের পকেটের উন্নয়নের জন্য নয়, জনগনের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, কর্মীরা যেন নেতার কাছে এসে তাদের কথা বলতে পারে। তাদের দুঃখের কথা শুনতে হবে। দুস্থ ও অসুস্থ নেতাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে কোন দুস্থ নেতা গেলে তিনি খালি হাতে ফেরত দেন না।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙ্গালীরা সত্যিকারের স্বাধীনতা পেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছিল হতাশা। পরে বঙ্গবন্ধুর রক্তে ভেজা মাটিতে ঐক্যের পতাকা নিয়ে আসেন শেখ হাসিনা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দিন রাত পরিশ্রম করে তিনি বাংলাদেশকে সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন। শেখ হাসিনা পৃথিবীর আলোচিত ২জন প্রধানমন্ত্রীর একজন। বিশ্বের সৎ তিনজন প্রধানমন্ত্রীর একজন। সেরা ৪ পরিশ্রমী রাষ্ট্রনায়কের একজন। সেরা ১০জন প্রভাবশালী নেতার একজন। তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ও জনপ্রিয় রাষ্ট্র নায়ক, দক্ষ প্রশাসক এবং সফল কুটনীতিক। আমরা তাঁর নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি।

সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য পলিটিশিয়ানের সীমানা পেরিয়ে গেছেন। তাঁর নেতৃত্বে সারাদেশে চলমান শুদ্ধি অভিযান সফল করব। এখন দরকার ক্লিন ইমেজের পার্টি। আমরা দূষিত রক্ত রাখব না। বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করব।

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, নতুন প্রজন্ম আগামী দিনের যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে তা আওয়ামী লীগকেই গড়ে তুলতে হবে। এই সরকার উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করছে। একসময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বললেও এখন বাংলাদেশের ঝুড়ি সম্পদে উপচে পড়ছে।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, পাকিস্তান জিন্দাবাদ শ্লোগান জিয়াউর রহমান চালু করেছিলেন। আর যে শ্লোগানে দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই জয় বাংলা শ্লোগানকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। যারা জয় বাংলা শ্লোগান বুকে ধারন করতে পারে না তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারন করতে পারে না। তারা জয়বাংলাতে ভয় পায়।

পরে ওবায়দুল কাদের সম্মেলন স্থলেই এডভোকেট মো. আবু জাহির এমপিকে সভাপতি এবং এডভোকেট আলমগীর চৌধুরীকে সাধারন সম্পাদক করে আগামী তিন বছরের জন্য হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষনা করেন। এছাড়াও বর্তমান সাধারন সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল মজিদ খানকে জাতীয় কমিটির সদস্য হিসাবে ঘোষনা করেন। সূত্র : বাসস