নাগরিকত্ব বিল ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থানকে দুর্বল করবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

December 11 2019, 12:35

ভারতের পার্লামেন্টে সদ্য পাস হওয়া নাগরিকত্ব বিল দেশটির ঐতিহাসিক ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থানকে দুর্বল করে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন না থামাটাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনার অন্যতম কারণ বলে ভারতের পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্য সঠিক নয়। বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি অত্যন্ত গভীর। আমাদের দেশে অন্য ধর্মের মানুষ নিপীড়িত নয়। সরকারি অনেক কর্মকর্তা অন্য ধর্মের অনুসারী। সব ধর্মের লোক এখানে আছেন।

বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারের সাথে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। গত সোমবার লোকসভায় এ বিল উত্থাপন করে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংবিধানকে উদ্ধৃত করে বলেন, এই দেশগুলোর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বলেই সেখানে অন্য ধর্মের মানুষ নিপীড়িত হচ্ছে।

নাগরিকত্ব বিল প্রণয়নের জন্য ভারত সরকার ২০১৪ সালের ৩১ শে ডিসেম্বরকে সর্বশেষ সময় নির্ধারণ করেছে। অর্থাৎ এই সময়ের আগে যেসব অমুসলিম ভারতে এসেছেন তাদের আবেদনের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেয়া হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ভারত ঐতিহাসিকভাবে একটি সহনশীল দেশ। তারা ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। সেখান থেকে পদস্খলন হলে ভারতের ঐতিহাসিক অবস্থানটা দুর্বল হবে বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, ভারতের নাগরিকত্ব বিল পাসের সময় যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে সেটি ঠিক না। যারা এ সব তথ্য দিয়েছেন এবং যারা তাদের বুঝিয়েছেন তারা সত্য কথা বলেননি। আমি আশা করবো আমাদের দেশে যারা অন্য ধর্মের লোক আছে তারা বিবৃতি দেবেন যে এটি ঠিক না।

বাংলাদেশের মানুষের দুশ্চিন্তা হয় বা আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এমন কোনো কাজ ভারত করবে না বলে আশা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) শুনানি সম্পর্কে ড. মোমেন বলেন, মিয়ানমারে গণহত্যার পক্ষে দাড়িয়ে সু চির কথা বলাটা দু:খজনক। আমি নিজে সু চির মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছি। এখন তার এই অধঃপতন দেখে আমার খুব দুঃখ লাগছে। আমি আশা করবো তিনি তার ভুল বুঝতে পারবেন এবং মানবতার পক্ষে কথা বলবেন।