নবজাতক রেখে পালালেন মা

December 08 2019, 11:21

চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ১৫ দিনের নবজাতককে ফেলে রেখে পালিয়ে গেলেন এক মা। ঘটনার পর থেকে কন্যা শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যাচ্ছেন অনেক নিঃসন্তান দম্পত্তি। তাদের কেউ কেউ শিশুটিকে লালন পালন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সুজাউদ-দৌলা রুবেল জানান, হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অপরিণত বয়সে জন্ম নেয়া শিশুটি প্রথম দিকে অসুস্থ থাকলেও সেবা-যত্ন পেয়ে এখন বেশ সুস্থ্। প্রকৃত অভিভাবক শেষ পর্যন্ত না এলে নিয়ম মেনেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তিনি বলেন, শিশুটির শারীরিক অপূর্ণতা থাকলেও এখন ভালো সেবা পেয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে শুরু করেছে। হাসপাতালে এই নবজাতককে দত্তক নিতে ইতিমধ্যে ১৫ জনেরও বেশি ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

হাসপাতালের সিনিয়র নার্স মুক্তি রাণী দাস জানান, গত ১৫ দিন আগে এখানে এক মা প্রসব করেন এই শিশুটি। চার দিন প্রসূতি ও নবজাতক একসঙ্গে ছিলেন। পরে চলেও যায় তারা। কিন্তু ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা হওয়ায় শিশুটিকে নিয়ে আবারো হাসপাতালে ভর্তি হন শিশুটির মা। গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালের ৪র্থ তলায় নারী ও শিশু ওয়ার্ডের একটি বেডে শিশুটিকে একা ফেলে রেখে চলে যান মা। বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনে এসময় সেখানে ছুটে যান কর্তব্যরত নার্স। কিন্তু অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও শিশুটির পাশে ছুটে আসেননি তার মা। এই নিয়ে পুরো হাসপাতালে হই চই পড়ে যায়।

চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহতলী গ্রামের নাম ঠিকানা ব্যবহার করে ‘সাথী’ নামে হাসপাতালে ভর্তি হলেও সেখানে এই ঠিকানায় তাদের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের রেজিস্ট্রি খাতায় মেয়ের নানার নাম তাজুল ইসলাম লেখা ছিল। এ নিয়ে বেকায়দায় পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, হাসপাতালে ফেলে যাওয়া শিশুটিকে নিয়ে যেতে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ইতিমধ্যে একজন মা তার বুকের দুধ খাওয়াতে শুরু করেছেন। তিনি নিয়মিত শিশুটির দেখাশোনাও করছেন। অরদিকে শিশুটিকে নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে অনেকেই। হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স ও কুলসুমা বেগম নামের এক নারী গত তিন ধরে শিশুটির দেখাশুনা করে বাচ্চাটাকে সুস্থ্য করে তুলছেন।

শিশুটিকে দেখাশুনাকারী কুলসুমা বেগম বলেন, আমি শিশুটিকে মায়ের আদর স্নেহ দিয়ে লালন-পালন করছি। তাকে পালনের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছি। কিন্তু তারা কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।

আড়াই শ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি নিয়ম মেনেই নবজাতককে বেড়ে উঠার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।