ধর্মের অপব্যবহার করে কেউ যেন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে : রাষ্ট্রপতি

December 25 2019, 11:12

জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, ধর্মের অপব্যবহার করে কেউ যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।

বড়দিন উপলক্ষে বুধবার বঙ্গভবনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘ধর্ম আমাদের আলোর পথ দেখায় এবং অন্যায়, অবিচার ও অন্ধকার থেকে দূরে রাখে…। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কেউ এই ধর্মের অপব্যবহার বা ভুল ব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।’

রাষ্ট্রপতি বাবা-মা’দের পাশাপাশি অভিভাবকদের আরো ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান, যাতে কেউ বিশেষ করে যুব সমাজ বিপথে চলে না যায়।

বাংলাদেশকে শান্তি ও সমৃদ্ধির দেশ আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের নিরলস প্রচেষ্টায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।

এসময় তিনি ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ এবং ২০২১ সালে দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে দেশবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।

এর আগে বড়দিন উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, যীশু খ্রিস্ট ছিলেন সত্যান্বেষী, মানবজাতির মুক্তির দূত এবং আলোর দিশারি। স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি পৃথিবীকে শান্তির আবাসভূমিতে পরিণত করতে তিনি বহু ত্যাগের বিনিময়ে সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও খ্রিস্টধর্মের সুমহান বাণী প্রচার করেন।

যীশু খ্রিস্ট পথভ্রষ্ট মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথে আহ্বান জানান উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘তিনি মানুষের মধ্যে ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা, মমত্ববোধ, সহানুভূতি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠাসহ শান্তিপূর্ণ অবস্থানের শিক্ষা দেন।’

আজ বঙ্গভবেনে রাষ্ট্রপতি খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে তাদের পবিত্র বড়দিনের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি আগামী দিনগুলোতে সুখী, সমৃদ্ধ ও আনন্দময় জীবন কামনা করেন।

এসময় তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সুখী, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবাইকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান।

বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং তার স্ত্রী রাশিদা খানম রাষ্ট্রপতি প্রাসাদে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। যেখানে মোমবাতি জ্বালিয়ে একটি ‘ক্রিসমাস ট্রি’ও স্থাপন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আর্চবিশপ, বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধি, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, ধর্মীয় নেতা ও পেশাজীবীরা অংশ নেবেন।

এছাড়া, অনুষ্ঠানে শিল্পীরা বড়দিনের গান পরিবেশন করবেন। পরে রাষ্ট্রপতি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের সাথে নিয়ে বড়দিনের কেক কাটবেন।

প্রসঙ্গত, যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মানুষও আজ বড়দিন উপযাপন করছে।

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচয়ে বড় ধর্মীয় আয়োজন বড়দিন হলো পুনর্জন্ম, নতুন শুরু, ক্ষমা ও শান্তি এবং ঈশ্বর ও মানুষের সম্পর্কের নবজীবন দানের উৎসব।

রঙিন বাতি দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো, বিশেষ প্রার্থনা, শিশুদের মাঝে উপহার বিতরণ এবং স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ এ উৎসবের মূল অনুষঙ্গ। এদিন গির্জায় প্রার্থনা শুরু ও শেষের পর গাওয়া হয় বড়দিনের বিশেষ গান ও বন্দনা সঙ্গীত। ইউএনবি