তরুণীদের খোলা পিঠে লেখা অশ্লীল গালিগালাজ, বিতর্কে রবীন্দ্রভারতীর বসন্তোৎসব
কেউ পরেছেন হলুদ শাড়ি। কারও মাথায় গোঁজা পলাশ ফুল। মাইকে জোরে জোরে বাজছে বসন্তোৎসবকে কেন্দ্র করে তৈরি করা রবীন্দ্রনাথের নানা গান। আবির রঙে রাঙা হয়ে যাচ্ছে চতুর্দিক। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসের বসন্তোৎসব পালনের এই ছবি নিয়ে কারো কোনো আপত্তি চোখে পড়ে না। কিন্তু একদল তরুণ-তরুণীর উচ্ছৃঙ্খলতায় বিতর্কে ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান।
ঠিক কী করেছে ওই তরুণ-তরুণীরা? সোশ্যাল মিডিয়ায় সদ্য ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, চারজন তরুণী পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাদের পিঠে আবির দিয়ে লেখা ইউটিউবার রোদ্দুর রায়ের বিকৃত রবীন্দ্রসংগীত ‘চাঁদ উঠেছিল গগনে’।
এছাড়াও আরেকটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। তাতে দেখা গিয়েছে, কয়েকজন তরুণী পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাদের পিঠে আবির দিয়ে লেখা বসন্ত এসে গেছে। ওই তরুণীর দিকে পিছন ফিরে বসে রয়েছে তিন যুবক। তাদেরও বুকে লেখা গালিগালাজ।
এই ছবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে বিশেষ সময় নেয়নি। তার ফলে চতুর্দিকে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। ছবি ঘিরে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ‘এ ঘটনা আধুনিকতার নামে অভব্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বসন্তোৎসবের মতো একটি অনুষ্ঠানে কীভাবে এমন অশ্লীল কাজ করতে পারল ওই তরুণ-তরুণীরা, বিভিন্ন মহলে ইতিমধ্যে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ছবিতে প্রচুর কারিকুরি করা হয়। অনেক সময় কেবলমাত্র নেটদুনিয়ায় খোরাক বানানোর জন্য ছবি সুপার ইম্পোজও করা হয়। এই ছবিটি ওইভাবে বানানো হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। রবীন্দ্রভারতীর বসন্তোৎসবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পাশাপাশি বহিরাগতরাও থাকে। সেক্ষেত্রে ছবিতে যাদের দেখা গিয়েছে তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নাকি বহিরাগত তা খতিয়ে দেখতে হবে।’
গত বছর ডিসেম্বরে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর কলাভবনে দু’দিন ধরে চলা নন্দন মেলায় রোদ্দুর রায়ের বিকৃত ‘চাঁদ উঠেছিল গগনে’ গান গাওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। যার জেরে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সেই ঝড় থামতে না থামতেই এবার রবীন্দ্রনাথের নাম বিজড়িত রাজ্যের আরো একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে মাথাচাড়া দিল বিতর্ক। সংবাদ প্রতিদিন।