ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচিত হওয়া নিয়ে পর্তুগাল কেন শঙ্কায়?

সারা বিশ্বের মতো পর্তুগালও থাকিয়ে আছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের দিকে। কে হচ্ছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট! কে হচ্ছেন আগামী চার বছরের জন্য বিশ্বের মাতব্বর? ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি জো বাইডেন ? এর চূড়ান্ত ফলাফল হয়তো পাওয়া যাবে আর কিছুক্ষণ পর। ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষার পালা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় যেই আসুক না কেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা শুরু করেছে তাদের নিজ দেশের হিসেব নিকাশ। তাদের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প ভালো নাকি জো বাইডেন? এদের মধ্যে ইউরোপের দেশ পর্তুগালও তাদের ভালো-মন্দের হিসেব কষতে শুরু করেছে।
পর্তুগালের দীর্ঘদিনের বন্ধু রাষ্ট্র হচ্ছে আমেরিকা। পর্তুগালে রয়েছে ওয়াশিংটনের সামরিক উপস্তিতি। সেই সাথে পর্তুগাল এবং আমেরিকা হচ্ছে সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইউরোপের সাথে আমেরিকার একধরনের দূরত্বই সৃষ্টি হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারো আগামী চার বছরের জন্য ক্ষমতায় আসলে পর্তুগালের জন্য একধরনের হুমকি হতে পারে। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যেই চীনা কোম্পানি হুয়াওয়েকে পরবর্তী প্রজন্ম ‘ফাইভ জি’ নেটওয়ার্কের অবকাঠামো তৈরি থেকে বাদ দেয়ার জন্য পর্তুগালকে চাপ দিচ্ছে। শুধু পর্তুগাল নয়, ইউরোপীয় দেশগুলো হুয়াওয়ে এবং ‘ফাইভ জি’ অবকাঠামো নিয়ে একটি ভূ-রাজনৈতিক যুদ্ধের মাঝামাঝি আটকে আছে। আমেরিকা অভিযোগ করেছে যে, বেইজিং এই নেটওয়ার্কগুলো ব্যবহার করে তথ্য চুরি করতে পারে, এমনকি দেশগুলোকে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
পর্তুগীজ সংবাদপত্রের ভাষ্যমতে, গত জুন মাসে পর্তুগীজ সরকার জানিয়েছে- তারা হুয়াওয়েকে ‘ফাইভ জি’ নেটওয়ার্কের অবকাঠামো নির্মাণের দরপত্রে বাঁধা প্রদান করবে না। এরপরেই পর্তুগালে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত জর্জ গ্লাস পর্তুগালের জাতীয় দৈনিক এক্সপ্রেসের সাথে এক সাক্ষাৎকারে পর্তুগালকে বন্ধু রাষ্ট্র আমেরিকা এবং চীনের মধ্যে যেকোন একটিকে বেঁছে নেয়ার তাগিদ দেন। এবং হুমকি দিয়ে বলেন, হুয়াওয়েকে ‘ফাইভ জি’ নেটওয়ার্ক করতে দিলে পর্তুগাল এবং আমেরিকার মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্যে পর্তুগালকে আহত করে এবং পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তোস সিলভা পাল্টা তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, পর্তুগালের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে পর্তুগীজ অথরিটি। এবং যেটা পর্তুগালের জন্য ভালো এবং লাভজনক তারা সেই সিদ্ধান্তই নিবে।
এর কিছুদিন পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রোথ, এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অফ আন্ডার সেক্রেটারি কীথ ক্রাচ ইউরোপীয় সফরের অংশ হিসেবে পর্তুগাল সফরে যান। এই সফরের এজেন্ডায় ‘ফাইভ জি’ ছিল। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, পর্তুগালের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকারকে সম্মান করি এবং আশা করি পর্তুগাল আমেরিকায় ব্যবহৃত ‘ফাইভ জি’ নেটওয়ার্কের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে।