‘জিতে গিয়েছি’ দাবি করে সমালোচিত ট্রাম্প, ভোটের ফল যাচ্ছে সমীক্ষার দিকে
বেশিরভাগ সমীক্ষায় যে পূর্বাভাস ধরা পড়েছিল, ধীরেধীরে একটু একটু করে সেই হিসেব মিলে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার অনেক কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন। কিন্তু হারার আগে হারতে রাজি নন ট্রাম্প । বরং একাধিক হুমকি থেকে পিছিয়ে পড়েও নিজের জয়ের দাবি, কোনো কিছুই বাকি রাখছেন না ট্রাম্প। ফ্লোরিডা, টেক্সাসের মতো আসন পকেটে নিয়েও বাইডেনের থেকে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছেন তিনি। হিসেব বলছে, ইতোমধ্যেই ২৩৮টি আসন জিতে ফেলেছেন বাইডেন, আর ট্রাম্পের ঝুলিতে ২১৩টি আসন। যদিও বুধবার সকালেই রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা ভোটে জিতে গিয়েছি, কিন্তু ষড়যন্ত্র করে ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছে। আমরা আদালতে যাব, যাতে কোরো ভোট এরপর না গণনা করা না হয়।’
ট্রাম্পের মতো জো বাইডেনও অবশ্য বক্তৃতায় দাবি করছেন, ‘আমরা জেতার পথেই রয়েছি। বড় খবর আসতে চলেছে।’ যদিও ট্রাম্প ফেসবুক ও ট্যুইটারেও জয়ের দাবি করতে থাকেন। এরপরই ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ট্রাম্প ও বাইডেন – দুজনকেই মনে করিয়ে দেন। এখনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়নি। ফলে জয়ী ঘোষণা হয়নি।
নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও ভোট করা হচ্ছে দাবি করে এ দিন টুইটারে ট্রাম্প লিখেছিলেন, ‘আমরা বড় কিছুর সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। কিন্তু ওঁরা নির্বাচন হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। তবে, আমরা কখনই তা হতে দেব না।’ এরপরই তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা সত্যিই নির্বাচনে জিতে গিয়েছি।’
এরপরই ফেসবুক কর্তৃপক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনই জেতার দাবি করতে থাকায় আমরা ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে নোটিফিকেশন দিতে শুরু করেছি যে এখনও ভোটগণনা চলছে। অর্থাৎ কে বিজয়ী, তা এখনও ঘোষণা করা হয়নি।’ বিরোধীদেরও তোপের মুখে পড়তে হয় ট্রাম্পকে।
ট্রাম্প বিরোধী সিএনএন থেকে ট্রাম্পপন্থী ফক্স নিউজ – সব চ্যানেলের ভোট সমীক্ষাই বলছিল জনপ্রিয়তায় এগিয়ে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন। কোথাও দুই প্রার্থীর ব্যবধান ১০ শতাংশ, তো কোথাও ৮ শতাংশ। কিন্তু, বিশেষজ্ঞদের বড় অংশের মতে, শুধুমাত্র এইটুকু দেখেই ডেমোক্র্যাট শিবিরের উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়া উচিত নয়। কারণ, ২০১৬-র নির্বাচনের সময় হিলারি ক্লিন্টনের ক্ষেত্রেও একই জিনিস হয়েছিল। তিনি তো শেষপর্যন্ত পপুলার ভোটে ট্রাম্পের থেকে এগিয়েও ছিলেন। কিন্তু, ইলেকটোরাল কলেজের ক্ষেত্রে ডন তাকে টেক্কা দিয়ে বেরিয়ে যান। এ দেশের প্রেসিডেন্ট পদের লড়াইয়ে যেটা আসল ফ্যাক্টর। এ বারও যে তেমন কিছু ঘটবে না, এখনও তার গ্যারান্টি ভোট-পণ্ডিতদের কেউ-ই দিতে পারছেন না। তাদের সকলেরই বক্তব্য, ‘ধৈর্য ধরতেই হবে।’ বাস্তবে দেখাও যাচ্ছে তাই। যত সহজে ট্রাম্প উড়ে যাবেন মনে করা হয়েছিল, বাস্তবে তা হচ্ছে না। বরং আপ্রাণ লড়াই চালাচ্ছেন তিনি।