জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বিদেশে আসা-যাওয়া করবেন না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জরুরী কোনো প্রয়োজন ছাড়া বিদেশ থেকে দেশে আসা বা দেশের বাইরে না যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, বিশ্বের ৬০টি দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। তাই প্রয়োজন ছাড়া দেশের বাইরে যাওয়া আসা বন্ধ রাখলে ভালো হয়। কারণ পৃথিবীতে করোনাভাইরাসের কারণে অনেক অনুষ্ঠান বাদ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গু বিষয়ে ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে এবিষয়ে একটি আন্তঃ মন্ত্রণালয় জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক সন্দেহজনক রোগীকে চিকিৎসা ও স্ক্রীনিং করছি। সব পোর্টে ২৪ ঘন্টা স্ক্রিনিং চলছে। এ পর্যন্ত ৪ লাখ ১৮ হাজার লোককে স্ক্রীনিং করা কয়েছে। আমরা প্রায় ১০০ রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছি। আশে পাশের দেশে করোনা ভাইরাস এসে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ৬০ টি দেশে এসেছে। বাংলাদেশে যে আসবে না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। আমরা তিনটি কমিটি করেছি। বিভিন্ন মন্ত্রণলয়ের প্রতিনিধিরা সেখানে আছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা নির্দেশ দিয়েছি যে দেশ থেকেই আসুক না কেনো, তারা যেখানেই থাকবে সেলফ কোয়ারেন্টাইনে থাকবে। এ পরামর্শ তাদের দেয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলা আইস্যুলেশন ওয়ার্ড করেছি। ভবনের টপ ফ্লোরে সেই ওয়ার্ড করা হয়েছে। রোগী বেশি হয়ে গেলে কমিউনিটি সেন্টারসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি জেলার হাসপাতালে দুইটি করে আইসিইউ যাতে থাকে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাইরে থেকে আসা কোন সন্দেহজনক ব্যক্তি পেলে, বিদেশ থেকে এসে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আইস্যুলেশন ওয়ার্ডে রাখা হবে। বিদেশ থেকে আসলে উপজেলা পর্যায়েও আগে সিভিল সার্জনের সাথে দেখা করতে হবে, এবং তার সব তথ্য দিতে হবে। প্রস্তুতির অংশ হিসাবে কুয়েত মৈত্রী হাসপালকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানে ২০টি আইসিইউর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিভিন্ন দূতাবাসেও জানানো হয়েছে, যারা ইতালি, ইরান, কোরিয়া থেকে আসবে তাদের বিশেষ রজর রাখতে বলা হয়েছে। তাদের মেডিকেল সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে। করোনা ভাইরাস চলে আসলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
কোনো রোগীর খোঁজ পেলে কোয়ারেন্টাইনে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
১৭ মার্চ অনেক বিদেশী আসবেন, তাদের বিষয়ে প্রস্তুতি আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা আসবেন তারা রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসাবে থাকবেন। তারা অল্প সময় থাকবেন। আশা করি তারা ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। তাদের কোনো সমস্যা হলে তো ব্যবস্থা থাকবেই।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের ১ কোটি লোক বাইরের দেশে কাজ করেন। যে ৬০টি দেশে দেখা দিয়েছে তার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশকিছু দেশ রয়েছে সেখানে তারা কাজ করে। বাংলাদেশী যারা বিদেশে চাকুরি করেন, তারা যদি জরুরী প্রয়োজন না হলে দেশে না আসেন বা না যান। তাদের যাতায়াতটা সীমিত করতে হবে। আমরা চাই না আমাদের দেশ আক্রান্ত হোক। যারা বিদেশে আছেন তারাও চাননা আমাদের দেশ করোনায় আক্রান্ত হোক। তাই প্রয়োজন ছাড়া বিদেশে যাওয়া আসা বন্ধ রাখলে ভালো হয়। করোনাভাইরাসের কারণে পৃথিবীতে অনেক অনুষ্ঠান বাদ দেয়া হয়েছে। আমরা আমরা এই সময়ে হ্যান্ডশেক না করি আর বাড়িতে গিয়ে সবার আগে মুখ হাত ধুয়ে ফেলি।