জনপ্রতি মুজিব বর্ষের লোগোর মূল্য ৯০০ টাকা!

March 19 2020, 06:31

যশোরের মনিরামপুরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের তত্ত্বাবধানে এক শ্রেণির শিক্ষক নেতারা অতিরিক্ত দামে মুজিব বর্ষের লোগো ব্যাজ ক্রয় করতে শিক্ষকদের বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ব্যাজ ক্রয়ের জন্য গুণতে হচ্ছে তিন গুণ পর্যন্ত মূল্য। প্রতি ব্যাজের মূল্য বাবদ বাধ্যতামূলক ৪০০ ও ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সূত্র মতে,  মুজিব জন্ম শতবর্ষ পালন উপলক্ষে মনিরামপুরের মাধ্যমিক স্তরের ১৮০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঝে লোগো ব্যাজ বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। স্থানীয় মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নেতাদের নিয়ে ব্যাজ তৈরি ও বিক্রির জন্য একটি মৌখিক কমিটি করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তার পছন্দের শিক্ষক নেতাদের দিয়ে কৌশলে এই লোগো ব্যাজ তৈরি ও বিক্রি কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ২০০ টি মাধ্যমিক স্তরের মাদরাসা, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে বিক্রির উদ্দেশে মুজিব শত বর্ষের লোগো ব্যাজ তৈরি করা হয়। কোনো প্রকার কোটেশন ছাড়াই পছন্দের লোক দিয়ে এই লোগো ব্যাজ তৈরি করান কতিপয় শিক্ষক নেতা।

স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির আশির্বাদপুষ্ট এক শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ শিক্ষকদের মুখে মুখে। ‘তেলবাজ’ খ্যাত ওই শিক্ষক নেতার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে কদরও রয়েছে। মুজিব বর্ষের লোগো ব্যাজ তৈরি ও সকল প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত দামে বাধ্যতামূলক ক্রয়ের ক্ষেত্রের তার সরাসরি প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে।

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ৩২ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ১৭ ইঞ্চি প্রস্থের একটি লোগো তৈরিতে ২০০ টাকার মতো খরচ হওয়ার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠান প্রতি  ৪০০ ও ৯০০ টাকা ধার্য করা হয়। শিক্ষক সমিতিভুক্ত প্রতিষ্ঠানদের ৪০০ এবং সমিতি বর্হিভূতদের জন্য ৯০০ টাকা হারে বাধ্যতামূলক লোগো ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়।

পরে সমিতি বহির্ভূত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আপত্তি জানালে ওই শিক্ষক নেতা শুধুমাত্র ৪০০ টাকায় ক্রয় করতে বাধ্য করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধান জানান, যেখানেই বাণিজ্য, সেখানেই ওই তেলবাজ শিক্ষক। ক্ষমতাসীন দলের এক জনপ্রতিনিধির কাছের লোক পরিচয় দিয়ে তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে খবর দারি করে চলেছেন। ২০০ টাকা মূল্যের লোগো ব্যাজ ওই শিক্ষক নেতার পরামর্শে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ৪০০ টাকা মূল্যে চাপিয়ে দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, কিছু শিক্ষক নেতারা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘আমি শিক্ষকদের অভিভাবক হলেও কিছুটা নিরূপায়।’ এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে একজন শিক্ষক নেতার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

লোগো ব্যাজ তৈরির সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যতম শিক্ষক নেতা গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম বলেন, ৯০০ টাকা নেয়ার সিদ্ধান্তটা মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়নের জন্য ধরা হয়েছিল, তবে কারও কাছ থেকে এখনও নেয়া হয়নি।

‘লোগো ব্যাজে কিছু টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে ঠিক, কিন্তু সেটা একটা মানবিক ফান্ড তৈরির জন্য,’ তিনি যোগ করেন। সূত্র : ইউএনবি