গুজবের কারণে শেয়ার বাজারের বেহাল দশা : অর্থমন্ত্রী

January 02 2020, 17:20

‘গুজবের ’ কারণেই শেয়ার বাজার বেহাল দশায় পরেছে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া পাঁচটার দিকে ঢাকা স্টক একচেঞ্জ পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকটি শেরে বাংলানগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বৈঠকে স্টক একচেঞ্জ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা আমার কাছে দাবি জানিয়েছেন- যেন বড় বড় কোম্পানি শেয়ার বাজারে আসে। আমি তাদের দাবির বিষয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করে জানিয়েছি বড় বড় কোম্পানি শেয়ার বাজারে আসবে। তবে কবে থেকে সেসব কোম্পানি শেয়ার বাজারে যুক্ত হবে সে ব্যাপারে কথা দিতে পারিনি।’

তিনি বলেন পুঁজিবাজার যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য এই রিউমারগুলো বন্ধ করার জন্য যে প্রচলিত আইন আছে, আইনটি কঠোরভাবে বাস্তবায়িত হয়, সেটি করে দেব। সেটি অবশ্যই বাস্তবায়ন করব।

এত এজেন্সি আছে সরকারের, নিয়ন্ত্রক সংস্থা আছে, তাহলে তাদের কাজ কী সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এজেন্সিগুলো করবে তখনই, আইনটা যদি শক্তিশালী হয়। আইনে যদি কোনো ত্রুটি থাকে, তাহলে পারবে না। আমি সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যানকে বলে দিয়েছি, তিনি এই বিষয়টি দেখবেন। যদি আরো শক্তিশালী আইন প্রণয়ন করা লাগে, আমরা সেটাও করে দেব।

মুস্তফা কামাল বলেন, তাদের একটা দাবি ছিল, আমরা তাদের ট্যাক্স কেটে নিই। ওই অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্সের ওই হারটা আমরা কমাতে পারি কী না। আমরা বলেছি, যতটুকু সম্ভব আমরা বিবেচনা করবো। তাদের আরেকটা দাবি ছিল, এক্সেস টু ব্যাংকিং ফাইন্যান্স। অন্যান্য যেমনিভাবে কোনো ক্লায়েন্ট ব্যাংকে গিয়ে বড় করতে পারে টাকা, ঠিক তেমনিভাবে পুঁজিবাজারে যারা ব্যবসা করেন, তারাও সেই সুযোগটা যেন পায়।

আমরা বলেছি, আমাদের জানা মতে এই মুহূর্তে দেশের কারো জন্যই রেস্ট্রিকশন নাই যে, ব্যাংকে যেতে পারবে না। ব্যাংক ক্লায়েন্ট রিলেশনশিপের ভিত্তিতে অন্যরা যেভাবে লোন পায়, সুযোগ-সুবিধা পায়, পুঁজিবাজারে যারা ব্যবসা করেন, তাদের জন্যও সেই সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

তিনি বলেন, সিকিউরিটি দিতে হবে, পুঁজিবাজারের আরো ভাল দিক হলো, অতীতে তারা লোন নিয়ে সরকারের সেই টাকা শোধ দিয়েছে। সুতরাং আমি মনে করি যে, তাদের জন্য আরো সুযোগ ভাল। সেজন্য আমরা বলেছি, তাদেরকে এলাউ করা হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, তাদের দাবি, কিছু ভাল শেয়ার বাজারে আনার জন্য। আমি আশ্বস্ত করেছি, দিন-ক্ষণ দিয়ে বলতে পারব না কবে নিয়ে আসব, যেসব সরকারি শেয়ারের মৌলিক এলাকা ভাল, সেসব শেয়ার বাজারে নিয়ে আসব।

এদিকে, ডিএসইসি সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রীর সাথে আলোচনার সময় তারা পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের ব্যবস্থা, বাজারে অর্থের সরবরাহ বৃদ্ধি, রাষ্ট্রয়াত্ত্ব কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা, টি-বন্ডের লেনদেন যথা শিগগিরই চালুকরণ, বহুজাতিক কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে উদ্বুদ্ধ করা, গ্রামীন ফোন এবং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার দ্বদ্ধের দ্রুত নিষ্পত্তি, ডিএসই এবং পুঁজিবাজারের লেনদেনের ওপর কর হ্রাস, অডিট রিপোর্টের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, পুঁজিবাজার উন্নয়নে আইসিবি ও অন্যান্য সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সমন্বয় কমিটি গঠনের দাবি তুলে ধরেন।