গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ধানের শীষে ভোট দিন : রিজভী
দেশের হৃত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আসন্ন ঢাকা সিটি নির্বাচনে ধানের শীষ মার্কায় ভোট দিতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক, বাক-ব্যক্তি, মৌলিক অধিকার নিয়ে আর যাতে কেউ কথা বলতে না পারে সেজন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর মধ্য রাতের নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপিকে অংশ নিতে দেয়া হয়নি। ক্ষমতাসীনরা উক্ত কাজগুলো করবে বলেই খালেদা জিয়াকে বন্দী করা হয়েছে। এই সিটি নির্বাচন তার মুক্তির জন্য, বন্দীশালা ভাঙার জন্য, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলনের একটি অংশ। বিএনপির এই নেতা জনগণের প্রাণের প্রতীক, গণতন্ত্রের প্রতীক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতীক ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।
শনিবার বিকেলে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী, কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
রুহুল কবির রিজভী বেলা ৩টার দিকে মালিবাগ আবুল হোটেলের সামনে থেকে উত্তর সিটিতে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে ধানের শীষে ভোট চেয়ে প্রচারণা শুরু করেন। সেখান থেকে প্রচারণা শুরু করে তিনি মালিবাগ চৌধুরী পাড়া, মীরবাগ, মধুবাগ হয়ে হাতিরঝিলের পাশ হয়ে আবারো মধুবাগ হয়ে বড়মগবাজার রেলগেইটের সামনে এসে প্রচারণা শেষ করেন। প্রচারণাকালে রিজভী রাস্তার পাশে, ফুটপাথে, দোকান-পাটে, বাড়ির সামনে দাঁড়ানো ভোটারদের মাঝে তাবিথ আউয়ালের ধানের শীষ প্রতীকের লিফলেট বিতরণ করেন।
তিনি মেয়র পদে তাবিথ আউয়ালকে ধানের শীষ, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী নীলুফা ইয়াসমিন নীলুর গ্লাস মার্কা এবং বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান।
এসময় অনেকেই রুহুল কবির রিজভীকে পেয়ে জিজ্ঞেস করেন তারা ভোট দিতে পারবেন কি না? ভোট কেন্দ্রে যেতে কোনো সমস্যা হবে কি না? রিজভী ভোটারদেরকে সকল প্রকার ভয়-ভীতি, সংশয় উপেক্ষা করে ১ ফেব্রুয়ারি নিশ্চিতে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের অংশ হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।
গণসংযোগকালে রিজভীর সাথে ছিলেন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক দফতর সম্পাদক আখতারুজ্জামান বাচ্চু, ২২, ২৩ ও ৩৬ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত আসনে মহিলা কাউন্সিলর নীলুফা ইয়াসমীন নীলু, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোর্শেদ আলম, ছাত্রদলের মামুন ভূইয়া, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, ফজলুল হক লিপন, আশিকুর রহমান, ইকরাম হোসেনসহ স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল ও ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। নেতাকর্মীরা প্রচারণাকালে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এবং ধানের শীষে ভোট চেয়ে স্লোগানে স্লোগানে গোটা এলাকা মুখরিত করে তোলেন। এসময় মালিবাগ, মীরবাগ, মধুবাগ ও মগবাজার এলাকার বিভিন্ন ভবন থেকে হাত নেড়ে সমর্থন জানানো হয়। রিজভীও তাদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে ধন্যবাদ জানান।
প্রচারণা শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এ দেশের মানুষ এখন এক ভয়ঙ্কর দুঃসময় অতিক্রম করছে। কারো কোনো কথা বলার স্বাধীনতা নেই, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতিটি দরজা বন্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান নিজের হাতের মুঠোয়, নিজেরে আচলের মধ্যে বন্দি করে রেখেছেন। তিনি চান আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, আর তার দল আওয়ামী লীগই শুধু ক্ষমতায় থাকবে। এদেশে আর কারো কোনো অধিকার থাকবে না। এরকম একটি অবস্থায় আজকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য যেখানে যতটুকু সুযোগ পাচ্ছে গণতন্ত্রের জন্য তার সর্বোচ্চ ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারণা চালাতে গিয়ে ইতোমধ্যে উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, দক্ষিণের প্রার্থী ইশরাক হোসেনের ওপর হামলা হয়েছে। বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে।
তারপরও আমরা গণতান্ত্রিক স্বার্থে সবকিছু মেনে নিয়ে চরম নিপীড়ন, নির্যাতন, হুমকী-হামলার মধ্যেও এই নির্বাচনটিকে কাজে লাগাতে চাই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য। কারণ গণতন্ত্রের প্রতীক, যিনি বারবার দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্রকে জনগণের কাছে ফিরিয়ে এনেছে তাকে আজকে বন্দী করে রাখা হয়েছে।