কী ঘোষণা দেবেন আজ শিক্ষামন্ত্রী?
করোনা পরিস্থিতিতে আগামী ২৯ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ঘোষণা করা থাকলেও চলমান লকডাউনের সময়সীমা ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে স্কুল-কলেজের ছুটি আরও কিছুদিন বাড়তে পারে।
তবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে তারা আন্দোলনেও নেমেছে। শিক্ষার্থীদের দাবিসহ সার্বিক দিক বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কবে থেকে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে ক্লাস শুরু করা হবে সেই ঘোষণা আসতে পারে আজ বুধবার (২৬ মে)। এক্ষেত্রে যেসব অঞ্চলে করোনা সংক্রমণের হার কম ও অনলাইন পাঠ একেবারেই সম্ভব হচ্ছে না সেগুলো নির্ধারণ করে ধারবাহিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হতে পারে। পাশাপাশি চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে তিন মাস পর পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণাও আসতে পারে।
বুধবার (২৬ মে)দুপুর ১২টায় ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলন করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর ও শিক্ষাবোর্ডের পক্ষ থেকে ৬০ দিন এসএসসি এবং ৮০ দিন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস রুমে পড়িয়ে তারপর পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার সময় আরও তিন মাস পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবনা রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে জোনভিত্তিক গুরুত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া, আগামী জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসএসসি-এইচএসসি শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে ক্লাস শুরুর ঘোষণা ও ২০২২ সালের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের সার সংক্ষেপ মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করতে পারেন।
জানা যায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা এবং আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো কীভাবে নেওয়া যায় তা নিয়ে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে তথ্য ও প্রস্তাবনা চাওয়া হয়েছে। এসব প্রস্তাবনা যাচাই-বাছাই করে মঙ্গলবার (২৫ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শ করেন শিক্ষামন্ত্রী। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন তিনি।
উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে দুই ধরনের প্রস্তাব করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ুয়া সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিনের আওতায় এনে তারপর ক্লাস রুমে ফেরানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। মন্ত্রী এ বিষয়েও কথা বলবেন।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলের দাবির ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবগত আছে। এ মুর্হূতে কী করণীয় তা শিক্ষামন্ত্রী জানাবেন।’
আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ জানান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্বের কোনো দেশে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আমরা পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে। সেজন্য করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। স্থগিত পরীক্ষাগুলো কীভাবে নেওয়া যায় সে বিষয়ে একাধিক মতামত দেওয়া হয়েছে। ফাইনাল সিদ্ধান্ত জানাবেন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে গত ২৪ মে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা না হলে বড় ধরনের আন্দোলনের হুমকি দেন তারা। তাছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ২৫ মে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষামন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন বলে জানান তারা।