কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর হাতে আটক ১৪৪ নাবালক শিশু, ফের তদন্তের নির্দেশ
ভারতশাসিত কাশ্মিরে নাবালক শিশুদের আটক করা নিয়ে জম্মু-কাশ্মির হাইকোর্টের নাবালক বিচার কমিটিকে ফের তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার ভারতের শীর্ষ আদালতের বিচারপতি এন ভি রামানার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে কাশ্মিরে বেআইনি ভাবে নাবালক শিশুদের আটক করা এবং ফোন, ইন্টারনেটের উপরে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ আবেদনের উপর শুনানি হয়।
এর আগে নিষেধাজ্ঞার সময় কাশ্মিরে বেশ কয়েক জন নাবালক শিশুকে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী বেআইনিভাবে আটক করে বলে সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা আবেদনে জানিয়েছিলেন শিশু অধিকার রক্ষা কর্মী এণাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় ও শান্তা সিনহা। এরপর জম্মু-কাশ্মির হাইকোর্টের নাবালক বিচার কমিটিকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে বলে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
কিন্তু জম্মু-কাশ্মির পুলিশের দেয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে কমিটি দাবি করে, বেআইনি ভাবে কোনো নাবালক শিশুকে আটক করা হয়নি। নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকে নানা ক্ষেত্রে আইন ভাঙার অভিযোগে ১৪৪ জন নাবালককে আটক করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ১৪২ জন পরে মুক্তি পায়। ২ জনকে জুভেনাইল হোমে (কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে) পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার ওই রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এণাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবী হুফেজা আহমাদি। তিনি জানান, কমিটি ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করেনি। জম্মু-কাশ্মির পুলিশের উপরে নির্ভর না করে নিরপেক্ষ তদন্ত করার প্রয়োজন ছিল। বেঞ্চ জানায়, কমিটির সদস্যদের সম্পর্কে আহমাদির একটি মন্তব্য প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। আহমাদি রাজি হন। বেঞ্চ জানায়, কমিটির সদস্যদের কিছু অসুবিধের মধ্যে কাজ করতে হয়েছে। তারা সময়ও কম পেয়েছেন। এরপরে কমিটিকে আবারো নাবালকদের বেআইনি ভাবে আটক করার অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার সময়ে আবেদনকারীরা জানিয়েছিলেন, জম্মু-কাশ্মির হাইকোর্ট ঠিক মতো কাজ করছে না। এরপর মঙ্গলবার বিচারপতিরা জানান, এ নিয়ে ওই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। জম্মু-কাশ্মির হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জবাবে জানিয়েছেন, এই তথ্য ঠিক নয়। নিষেধাজ্ঞা জারির পরেও হাইকোর্ট ‘ঠিকই কাজ করেছে’। ঘটনাচক্রে এ দিনই গৃহবন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি চেয়ে কাশ্মিরের তিন নেতার আর্জি খারিজ করে দিয়েছে জম্মু-কাশ্মির হাইকোর্ট। ফারুক আবদুল্লার ভাই মুস্তাফা কামাল এবং এএনসি দলের প্রধান খালিদা শাহ ও তার ছেলে মুজফ্ফর তাদের আর্জিতে জানিয়েছিলেন, ৫ অগস্ট থেকে তাঁদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ হাইকোর্টে জানায়, ওই তিন নেতাকে গৃহবন্দি করা হয়নি। তারপরেই আর্জি খারিজ হয়ে যায়। সূত্র : আনন্দবাজার।