করোনা বাংলাদেশে দ্রুত রূপ পরিবর্তন করছে: বিসিএসআইআর

September 06 2020, 15:34

বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) অনেক দ্রুত রূপ পরিবর্তন করছে। বিশ্বে এর পরিবর্তনের হার ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ হার ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ।

রোববার (০৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এর জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরি এ তথ্য প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানটির কোভিড-১৯ জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। সভাপতিত্ব করেন বিসিএসআইআর’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের ৮ বিভাগ থেকে সর্বমোট ২৬৩টি জিনোম সিকোয়েন্সিং ডাটা বিশ্লেষণ করা হয়। গত মে মাসের ৭ তারিখ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত এসব ডাটা সংগ্রহ করা হয়। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল ভাইরাসের সংক্রমণ, মিউটেশনের হার, জিনগত বৈচিত্র্য, নন-সিনোনিমাস মিউটেশন এবং জিনোমিক ফাইলোজেনি পর্যবেক্ষণ করা। গবেষণার ফলাফলকে কোভিড-১৯ মহামারি রোধে কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যবহার করা।

সংগৃহীত নমুনায় শতভাগ ক্ষেত্রে আধিপত্যকারী ভ্যারিয়েন্ট জি৬১৪ (স্পাইক প্রোটিনে ৬১৪তম অবস্থানে অ্যাসপাটি এসিডের পরিবর্তে গ্লাইসিন হওয়ার কারণ) এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ২৬৩টি সার্স কোভ ২ জিনোম বিশ্লেষণে ৭৩৭ পয়েন্টে মিউটেশন পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৩৫৮ নন-সিনোনিমাস অ্যামিনো এসিড প্রতিস্থাপন ঘটায়। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে বার্ষিক মিউটেশনের হার ২৪ দশমিক ৬৪ নিউক্লিওটাইড।

স্পাইক প্রোটিনের জিনে ১০৩টি নিউক্লিওটাইড মিউটেশনের মধ্যে ৫৩টি নন-সিনোনিমাস অ্যামিনো এসিড প্রতিস্থাপন ঘটে, যার মধ্যে ৫টি স্বতন্ত্র। যা বিশ্বে আর কোথাও নেই। সংগৃহীত নমুনায় শতভাগ ক্ষেত্রে ৪টি মিউটেশন পুনরাবৃত্তি লক্ষ্য করা গেছে। কয়েকটি রিসার্চ পেপার শিগগিরই আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হবে।

চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোভাক রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, আমেরিকার প্রতিষ্ঠান মর্ডানা, দ্য ইউনির্ভাসিটি ও অক্সফোর্ডসহ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করা ৫০টি প্রতিষ্ঠানে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। যা বাংলাদেশের কোভিড-১৯ উপযোগী ভ্যাকসিন উৎপাদনে সহায়তা করবে এবং বিসিএসআইআর তার অংশীদার হওয়ার গৌরব অর্জন করবে দাবি করেছে বিসিএসআইআর।

বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ সংখ্যক জিনোম সিকোয়েন্সিং করা ৫টি প্রতিষ্ঠানের বিসিএসআইআর একটি। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম জিনোমিক রিসার্চ ল্যাব বলে গণ্য করা হয় বিসিএসআইআরকে। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নসহ বেশ কয়েকটি খ্যতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।