করোনা ঠেকানোর যন্ত্র আবিস্কার করতে গিয়ে বিজ্ঞানী এখন রোগী
অস্ট্রেলিয়ান এক বিজ্ঞানী এমন একটি যন্ত্র তৈরির চেষ্টা করছিলেন যেটি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষকে সাহায্য করবে। কিন্তু এটি উদ্ভাবন করতে গিয়ে যন্ত্র থেকে ছোট্ট চুম্বক খণ্ড তার নাকের ভেতর আটকে গেল। তখন এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে তাকে দৌড়াতে হলো হাসপাতালে।
ড. ড্যানিয়েল রিয়ার্ডন যা তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন সেটি অনেকটা নেকলেস ব কণ্ঠহার আকৃতির একটি যন্ত্র। কেউ মুখে হাত দেয়ার চেষ্টা করলেই এই যন্ত্রটি শব্দ করে সতর্ক করে দেয়ার চেষ্টা করবে।
কিন্তু যেভাবে পরিকল্পনা করেছিলেন, ড. রিয়ার্ডনের যন্ত্রটি আসলে সেভাবে কাজ করছিল না।
‘আমার আবিষ্কারটির বেলায় আসলে উল্টো ব্যাপার ঘটলো- এটি ক্রমাগত শব্দ করে যাচ্ছিল যতক্ষণ না এর কাছে একটি চুম্বক এনে রাখা হচ্ছিল। বিপদে পড়েছি বুঝতে পারছিলাম। আমি নিজে নিজেই হাসছিলাম এবং হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। এরপর আমি কোন কিছু না ভেবেই এই চুম্বকের টুকরোগুলো আমার মুখের ওপর রাখতে শুরু করলাম।’
‘প্রথমে আমার কানের লতিতে, তারপর আমার নাকের ফুটোর কাছে। তবে বিপদ ঘটলো যখন আমি দ্বিতীয় নাকের ফুটোর কাছেও একটা চুম্বক রাখলাম। তখন চুম্বকের টুকরোগুলো একটা আরেকটার সঙ্গে লেগে গেল। একটা চুম্বক আমার নাকের ভেতর আটকে গেল।’
ড. রিয়ার্ডন অন্য চুম্বকের টুকরোগুলো ব্যবহার করে ভেতরের টুকরোগুলো বের করে আনার চেষ্টা করলেন। কিন্তু পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠলো। শেষ দুটি চুম্বকের টুকরোও নাকের ভেতর আটকে গেল।
এবার তিনি একটি প্লায়ার্স ব্যবহারের চেষ্টা করলেন। কিন্তু নাকের ভেতরের চুম্বকগুলো তার প্লায়ার্সটিকে আকর্ষণ করছিল। তখন তিনি নাকের ভেতর ব্যথাও অনুভব করছিলেন।
ড. ড্যানিয়েল রিয়ার্ডন অবশ্য খুব শান্তভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করলেন।
‘প্রথমে একটু ব্যথা লাগছিল। তবে আমি খুব বেশি বিচলিত হইনি। কিন্তু যখন আমি বুঝতে পারলাম যে এই চুম্বকের টুকরোগুলো আমার পক্ষে বের করা সম্ভব নয়, তখন আমি বেশ ঘাবড়ে গেলাম।’
এই পর্যায়ে এসে ড. ড্যানিয়েল রিয়ার্ডন বুঝতে পারলেন এবার তাকে মেলবোর্নের স্থানীয় হাসপাতালে যেতেই হবে। যে হাসপাতালে তাকে যেতে হলো সেখানে কাজ করেন তার প্রেমিকা।
‘ডাক্তাররা সবাই আমার বান্ধবীকে চিনতো। তারা সবাই হাসাহাসি করছিল। ওরা জিজ্ঞেস করছিল তুমি কি নাকের ভেতর চুম্বকের টুকরো রাখছিলে?’
তবে ডাক্তাররা শেষ পর্যন্ত চুম্বকের টুকরোগুলো নাকের ভেতর থেকে বের করে আনতে পারলেন। শেষ পর্যন্ত সুস্থভাবেই তিনি হাসপাতাল থেকে ফিরে আসতে সক্ষম হলেন।
ড. ড্যানিয়েল রিয়ার্ডন তার যন্ত্র উদ্ভাবনের কাজে আপাতত ক্ষান্ত দিয়েছেন।
সূত্র : বিবিসি