এক মণ ধানে দুই কেজি পেঁয়াজ : হতাশায় কৃষক
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় আমন ধানের ফলন ভালো হলেও বাজারে ধানের দাম দেখে হতাশ হয়ে পরেছে কৃষকরা। তার পরেও সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হয়নি। উপজেলার খাদ্য গুদাম থেকে ধান কেনার প্রস্তুতি চলছে। ধান বিক্রির প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় বিপাকে পড়ছে কৃষকরা। তাছাড়া চার ভাগের এক ভাগ কৃষক সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পারবেন। সব মিলিয়ে উপজেলার কৃষকরা ধান আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে এমনটা জানা গেছে।
উপজেলার বাশাইল গ্রামের কৃষক বিনোদ বৈদ্য আক্ষেপ করে বলেন, প্রতিটি শ্রমিকের মূল্য দিতে হয় ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। তার পরে ধান চাষ করতে যে খরচ হয় তাতে জমিতেই প্রতিমণ ধানের মূল্য পড়ে ৭শ’ টাকা। ফলন ভালো হলেও লাভ নেই। কারণ বাজারে প্রতিমণ ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৩০টাকায়।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে এককেজি পেয়াজ বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে ২৫০-২৬০টাকায় আর এক মণ ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ৪৩০ টাকায়। অর্থাৎ এক মণ ধান বিক্রি করে দুই কেজি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে।
কৃষক হালান মোল্লা বলেন, কয়েকদিন পূর্বে ধানের দাম একটু বেড়েছিল। বর্তমানে তাও কমে গেছে। ফলন ভালো হলে লাভ কি হবে? ধানের দাম না থাকায় কষ্ট বৃথা যাবে। দিনমজুরের টাকা আর ঋণের কিস্তি দিতে এখন কম দামেই ধান বেচতে হবে। প্রত্যেকবার এরকম লোকসান হলে ধান চাষ বাদ দিয়ে অন্য কাজ করবে কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৭শত পাঁচ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে উফশী ২০৩ হেক্টর জমিতে আবাদ করে প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই দশমিক নয় ও স্থানীয় জাতের আমন ধান ৫০২ হেক্টর জমিতে আবাদ করে প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক দশমিক ছয়। ঘূর্নিঝড় বুলবুলের কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা একটু কম হবে। এ উপজেলায় প্রায় ১৬শত কৃষক এবার আমন আবাদ করেছেন। উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হলেই ধানের দাম বেড়ে যাবে।