ইসরাইলকে গোলান মালভূমি ছাড়ার আহ্বান জাতিসঙ্ঘের
সিরিয়ার গোলান মালভূমি থেকে ইসরাইলকে সরে যেতে আনুষ্ঠানিকভাবে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। সাধারণ পরিষদের এক প্রস্তাবে দেশটিকে দখলকৃত পুরো এলাকা ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার দিনভর অধিবেশনে ইসরাইল-সংশ্লিষ্ট আরো চারটি পদক্ষেপ অনুমোদন করেছে সাধারণ পরিষদ। আইনগতভাবে এসব প্রস্তাব মানতে বাধ্য নয় তেল আবিব। তবে এসব প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে ইসরাইলি দখলদারিত্ব ও অবৈধ বসতি নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিরোধিতা জোরালো হতে পারে।
১৯৬৭ সালের জুনে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় সিরীয় ভূখণ্ড গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরাইল। সেখান থেকে সিরিয়ান আরব বাসিন্দাদের বেশির ভাগই পালিয়ে যায়। ১৯৭৩ সালে এটি পুনর্দখলের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় সিরিয়া। ১৯৮১ সালের ৪ ডিসেম্বর একতরফাভাবে ওই এলাকাকে নিজেদের অংশ ঘোষণা করে ইসরাইল। তবে এই দখলদারিত্বের স্বীকৃতি দেয়নি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের গ্রহণ করা এক প্রস্তাবে ইসরাইলকে পূর্ব জেরুসালেম ও গোলান মালভূমিসহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রাকৃতিক সম্পদের শোষণ বন্ধ করতে বলা হয়।
বুধবার সাধারণ পরিষদে সিরীয় গোলান মালভূমিসংক্রান্ত প্রস্তাবের পক্ষে ৯১টি দেশ ও বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৯টি দেশ ভোট দেয়। আর ৬৫টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। এটিকে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের গ্রহণ করা অপর এক প্রস্তাবের বাস্তবায়ন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সিরীয় গোলান উপত্যকায় চলমান দখলদারিত্ব ওই এলাকায় বিস্তৃত ও দীর্ঘমেয়াদি শান্তি স্থাপনের পথ রুদ্ধ করেছে।
গোলান প্রস্তাব ছাড়াও বুধবার ইসরাইল-সংশ্লিষ্ট আরো চারটি পদক্ষেপ নিয়েছে সাধারণ পরিষদ। এর একটিতে ইসরাইলকে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুসালেমসহ দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূমির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও সংরক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে। আরেকটিতে ইসরাইলকে অবৈধ বসতি নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
অপর এক পদক্ষেপে ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসঙ্ঘের বিভিন্ন দফতরের কাজের স্বীকৃতি দেয় সাধারণ পরিষদ। আর সর্বশেষ পদক্ষেপে ফিলিস্তিন-সংক্রান্ত তথ্য ও জাতিসঙ্ঘের সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে দিতে বিশেষ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
উল্লেখ্য, জাতিসঙ্ঘের মূল ছয়টি অঙ্গের একটি নিরাপত্তা পরিষদ। পাঁচ স্থায়ী সদস্য ও অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত ১০ সদস্য দেশের সমন্বয়ে মোট ১৫ সদস্যের এই পরিষদ কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করলে তা মানতে সদস্য দেশগুলো আইনগতভাবে বাধ্য।
তবে সব সদস্য দেশের সমন্বয়ে গঠিত হলেও সাধারণ পরিষদ কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করলে তা মানতে আইনগতভাবে বাধ্য নয় কোনো সদস্য দেশ। ফলে বুধবার গৃহীত প্রস্তাবগুলো ইসরাইলের জন্য কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে পারেনি। আরটি নিউজ।