আমার কর্মীর গায়ে আচড় দিয়ে ১ ঘণ্টা কেউ আরামে ঘুমাতে পারবে না : শামীম ওসমান

December 07 2019, 15:38

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, খেলা যদি ওই পর্যায়ে যায় তাহলে ডাক দিলে ফতুল্লার নেতাকর্মীরা প্রস্তুত আছেন। নারায়ণগঞ্জে মাটিতে কিন্তু মাটি দেখা যাবে না, শুধু মাথা দেখা যাবে। ক্ষমতার দম্ভে বলি না।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শামীম ওসমান বলেন, শামীম ওসমান থাকতে নেতাকর্মীদের উপর আঘাত করবে আর তাতে নারায়ণগঞ্জ শান্ত থাকবে এটা যদি কেউ মনে করে তার মত বোকার রাজ্যে আর কেউ বাস করেনা। আমার জীবন থাকলে আমার কর্মীর গায়ে একটা আচড় দিয়ে নারায়ণগঞ্জে ১ ঘণ্টা কেউ আরামে ঘুমাতে পারবেনা। আমি আওয়ামীলীগের একজন সাধারণ কর্মী আমার কথা কেউ হালকা করে নিবেন না। ডাক দিলে তখন সবাই এগিয়ে আসবে। তখন নারায়ণগঞ্জের মাটিতে শুধু মাথা দেখা যাবে। সুতরাং ওই খেলা খেলতে আসবেন না। অনেক ধৈর্য ধরেছি।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ফতুল্লায় নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দেয়া এক বক্তব্যে এ হুশিয়ারি দেন তিনি।

মেয়র আইভীর মামলা প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, আমার কথা বলা উচিত। এই মামলা তারা খেয়েছে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে। আজকের থেকে ২২ মাস আগে নারায়ণগঞ্জে হকারদের সাথে সংঘর্ষ হয়েছিল মেয়রের। হকারদের সাথে মেয়রের সংঘর্ষ হয় এটা আমি কোথাও শুনি নাই। হকার তো সাধারণ গরীব মানুষ। গরীব মানুষকে নিয়ে মারধর করা এটা কোন রাজনীতিকের কাজ কিনা আমি জানি না। ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কোন সম্পৃক্ততা ছিল না। আওয়ামী লীগের এক সময়ের তুখোর নেতা নিয়াজুল হেটে যাচ্ছিল, সে ঘটনার বিষয় জানতোও না। বিএনপি পরবর্তী সময়ে পারিবারিক চাপে রাজনীতি থেকে সরে যেতে হয়েছিল নিয়াজুলকে। এই নিয়াজুলের পরিচয় হচ্ছে, এই নিয়াজুলের বড় ভাই হচ্ছে নজরুল ইসলাম সুইট। নিয়াজুল গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম দেখে আছরের নামায পড়ার উদ্দেশ্যে গাড়ি থেকে নেমে যায়। যদি হামলা করতে যেতো তাহলে একা যেতো না, সাথে ২০-২৫ জন লোক থাকার কথা। রাজনীতি করা ছেলে যখন দেখেছে গরীব মানুষকে মারা হচ্ছে তখন সে প্রতিবাদ করেছিল। পরে তার উপর হামলা করা হলো। ভিডিও ফুটেজ দেখেন।

সাংসদ বলেন, এই মামলা হাইকোর্ট থেকে ২২ মাস নিলো না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, আইজিপি, এসপি, ডিসি, ওসিকে বিবাদী করা হলো। এসব করে আমাদের নামে মামলা দেওয়া হলো।

শামীম ওসমান বলেন, বারবার নির্যাতনের শিকার হয়েও বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসেন প্রধানমন্ত্রী। অসীম ধৈর্যের মালিক তিনি। আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীলকন্ঠী। তিনি সকল বিষ খেয়ে হজম করেন। তিনি ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশের মানুষের শান্তি পাবে।

শামীম ওসমান বলেন, আমার এখানে আসাই উচিত ছিল না, তারপরও এসেছি। আমি এখানে এসেছি আসামি হিসেবে। একটি মামলার আসামি আমি। আমি যাকে গোনায় ধরি না সেরকম একটা মানুষ আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

শামীম ওসমান বলেন, কে, কেন মামলা করলো এই ব্যাখ্যা সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনাদের মাধ্যমেই আসবে বলে মনে করি। আপনাদের কারণেই এই মামলার মূল রহস্য উদঘাটিত হয়েছিল। এই মামলায় আসামি করা হয়েছে আমাকে, আরও আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের পোড় খাওয়া ত্যাগী নেতাকর্মীদের। আজকে আওয়ামী লীগ না হয়ে অন্য সরকার ক্ষমতায় থাকলে এই নারায়ণগঞ্জের রাস্তায় এই মামলার কারণে চারা নাচতো, অন্য কিছু নাচতো না। ওই ক্ষমতা এই নেতাকর্মীদের আছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মিজানুর রহমান বাচ্চু মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন শীল, সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও আড়াইহাজার পৌরসভার মেয়র সুন্দর আলী, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু প্রমুখ।