আবরার ফাহাদের বাবাকে আপসের প্রস্তাব
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পরিবারকে মোবাইলে আপসের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সাত্তার নামে এক ব্যক্তি আসামিদের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব দেন। শুক্রবার দুপুরে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আবরারের বাবা জানান, কয়েকদিন আগে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে আমার মোবাইলে ফোন আসে। জয়পুরহাট থেকে নিজেকে সাত্তার পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, আপনার ছেলে তো চলে গেছে, আর তো ফিরে আসবে না। কিন্তু এতগুলো ছেলের জীবনও তো নষ্ট হয়ে যাবে। আল্লাহ বলেছেন, হত্যার বদলে হত্যা কিন্তু মাফ করে দেয়া সর্বোত্তম। আসামিদের মধ্যে অনেকের বাড়ির লোকই অসুস্থ। সকালে একজনের বাবা মারা গেছেন। আমরা কয়েকজন আসামির পক্ষ থেকে আপনাদের সাথে দেখা করতে চাই। একথা শোনার সাথে সাথে তিনি বলেন, এরপর ভুলেও আর যেন আর কল না দেয়া হয় বলেই ফোন কেটে দেন।
আসামিদের পক্ষ থেকে আপসের প্রস্তার দেয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। তিনি লিখেছেন, ‘লজ্জাহীনতা আর দুঃসাহস, দুইটারই লিমিট থাকা উচিত ছিল।’ ফাইয়াজের সেই স্ট্যাটাসে প্রায় তিন শতাধিক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন।
গোলাম কুদ্দুস নামে একজন লিখেছেন, ‘বুয়েটে আবরার হত্যাকারীদের বাবা-মায়েদের আমার অনুরোধ- আপনারা আদালতে যান গিয়ে বুয়েটের প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করুন যে আমরা আমাদের সন্তানকে আপনাদের জিম্মায় দিয়ে এসেছিলাম। কিভাবে তারা খুনি হলো? কারা তাদের খুনি বানালো? আদালতের মাধ্যমে বুয়েটকে এর জবাব দিতে বাধ্য করুন।’
শারমিন মাসুদ ঝর্ণা নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘খুনিদের ক্ষমা করার কোনো প্রশ্নই আসে না। কেন মনে ছিল না যখন ফাহাদ বাবাকে মেরে ফেলেছিল। আসামিদের বাবা-মা কেন ওদের শিক্ষা দিতে পারল না!’
আফসানা জেরিন নামে একজন লিখেছেন, ‘ফোনটা কে দিলো পুলিশ তা বের করতে পারে তাই না? তা হলে তাকে খুঁজে বের করে তার একটা ছেলেকে গুলি করে মারা হোক। তারপর তাকে বলা হোক ক্ষমা করে দিতে।’
ওমি জামান নামে একজন লিখেছেন, ‘ওরা এতটা সাহস কিভাবে পায় জানি না। আবরারও তো বাঁচতে চেয়েছিল। ওরা কী দিয়েছিল সেইদিন? কেন এমন নিষ্পাপ ভাইটাকে মারলে? যদি নিজের হাতে ক্ষমতা থাকতো তা হলে আবরারকে মারার পরদিনই ওদের গরম তেলে পুরিয়ে মারতাম।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শিবিরের সাথে জড়িত সন্দেহে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করে। আবরারের একটি ফেসবুক পোস্টের কারণে তার ওপর আক্রমণ করা হয়েছিল। ওই পোস্টে আবরার ভারতের সাথে বাংলাদেশের চুক্তির সমালোচনা করেছিলেন।