অফিসের মালি ইউএনও ওয়াহিদাকে হামলা করেছে: পুলিশ

September 12 2020, 13:55

 

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের ওপর রবিউল ইসলাম (৪৩) নামে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এক সরকারি কর্মচারী হামলা চালিয়েছেন বলে জানিয়েছে  পুলিশ।  গ্রেপ্তারের পর  প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইউএনওকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করেছেন রবিউল।

শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে  রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য এই তথ‌্য জানান।

তিনি বলেন, ‘এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা সংগঠিত হওয়ার পর দিনাজপুর পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে  পুলিশের একটি দল ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও মূল অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। সে ফলশ্রুতিতেই মামলার আসামি ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের চুরির ঘটনায় বরখাস্ত হওয়া মালি রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিউল দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ধামইরহাট ভীমপুর গ্রামের খতিব উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। তাকে গত জানুয়ারী মাসে চুরির ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার কাছ থেকে ইউএনওকে হত্যার চেষ্টায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও অন্যান্য উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে।’

ব্রিফিংয়ের সময় পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আবু ইমাম জাফরসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. ইসরাইল হোসেন জানান, শনিবার বিকেল ৫টায় দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাইল হোসেনের আদালতে রবিউল ইসলামকে (৩৬) আদালতে সোপর্দ করা হয়। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আবু ইমাম জাফর রবিউলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ডিবি পুলিশ পরিদর্শক জানান, ‘গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তাকে তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে হত্যা চেষ্টায় ব্যবহৃত হাতুড়ি দিনাজপুর শহরের মুন্সিপাড়া থেকে কেনা হয়েছিলো। ওই হাতুড়ি গত শুক্রবার মধ্যরাতে ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাসভবনের সামনের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। হাতুড়ির ক্রেতা রবিউলকে শনাক্ত করে দোকানের মালিক শহরের মধ্য বালুবাড়ি এলাকার সাহেব আলীর ছেলে খোকন আলী শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসমাইল হোসেনের কাছে সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

এদিকে এই মামলায় গত ৬ সেপ্টেম্বর আদালত থেকে ৭ দিনের রিমান্ডে থাকা গ্রেপ্তার আসামি আসাদুল হক (৩৫) এবং শুক্রবার গ্রেপ্তার হওয়া আসামি নাহিদুল হোসেন পলাশকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পলাশ ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের নৈশ্য প্রহরী হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার অপর ২ আসামি সান্টু কুমার দাস ও নবীরুল ইসলামকে ৭ দিন রিমান্ড শেষে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ভোর রাতপর্যন্ত ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদে সামনের পুকুর থেকে ইউএনওকে জখমের কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি ছাড়াও চাবির থোকা, একটি কাঠের মই ও অন্যান্য উপকরণ আলামত হিসেবে ডিবি পুলিশ উদ্ধার করেছেন।