উপেক্ষিত শ্রম আইন; বঞ্চিত কর্মকর্তা কর্মচারীরা

October 19 2019, 20:15

কোম্পানির মুনাফায় শ্রমিকের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। এ জন্য গঠন করতে হবে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও শ্রমিক কল্যাণ তহবিল (ডব্লিউপিপিএফ)। কোনো কোম্পানি যে পরিমাণ মুনাফা করবে তার ৫ শতাংশ এ কল্যাণ তহবিলে সংরক্ষণ করতে হবে। বছর শেষে তহবিলের দু-তৃতীয়াংশ শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে সমান ভাগ করে দিতে হবে। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ২৩২ ও ২৩৪ ধারায় এমন বিধান থাকলেও কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত এ তহবিল গঠন করেনি। আবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও আইনটি পরিপালনের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। ফলে বছরের পর বছর উপেক্ষিত থাকছে শ্রম আইনের ধারা। আর এতে বঞ্চিত হচ্ছেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শ্রম আইনের ২৩২ ও ২৩৪ ধারা পরিপালন করতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আজ পর্যন্ত অব্যাহতি দেয়া হয়নি। তাই তারা আলোচ্য বিধান পরিপালনে আইনগতভাবে বাধ্য। কিন্তু এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি। ফলে এটি পরিপালনে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২৩২(১) ধারা অনুযায়ী কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ অন্যূন এক কোটি টাকা হলে বা স্থায়ী সম্পদের মূল্য কমপক্ষে দুই কোটি টাকা হলে এরূপ কোম্পানিকে ২৩৪(১) ধারা অনুযায়ী একটি শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও একটি শ্রমিক কল্যাণ তহবিল গঠন করতে হবে। কোম্পানির বার্ষিক মুনাফার ৫ শতাংশ এ তহবিলে সংরক্ষণ করতে হবে। আইন অনুযায়ী এ তহবিলের সুবিধাভোগী হবেন প্রতিষ্ঠানের মালিক, অংশীদার, পরিচালনা পর্ষদ সদস্য বা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ছাড়া অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী। তবে তাদেরকে ওই কোম্পানিতে কমপক্ষে ৯ মাস চাকরিতে নিযুক্ত থাকতে হবে। এ তহবিলের দু-তৃতীয়াংশ সুবিধাভোগীদের মাঝে সমান হারে বিতরণ করতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, আইনটি পরিপালন না করা বা পরিপালনে নির্দেশনা না দেয়া যুক্তিযুক্ত হয়নি। তবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে আইনের আলোচ্য ধারা পরিপালনে কিছু সংশয় রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ শ্রম আইন পরিপালন না করায় এক দিকে আইনটি যেমন উপেক্ষিত হচ্ছে, পাশাপাশি এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী।